অনলাইন ডেস্ক
শুক্রবার (১৫ই মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে আত্মহত্যা করে অবন্তিকা। আত্মহত্যার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
রাত সাড়ে ১২টার পর থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দীন ইসলাম ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দীকির বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
এ অবস্থায় ফাইরুজের ওই সহপাঠীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ওই সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ফাইরোজ সাদাফ অবন্তিকা লিখেছেন, ‘আমি যদি কখনও সুইসাইড করে মারা যাই, তবে মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী। আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানাভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে, যে আমাকে বহিষ্কার করা উনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনও জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতামও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজিং কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেওয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনও আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্টদের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায়, সেটা কুমিল্লার কারো সৎ সাহস থাকলে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাত বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে বলে, ‘ৃ তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলছস কেন? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে ছাল তুলি, কে বাঁচাবে? আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিল। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিক্যাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তে থাকে না এমন পোস্টে। যেখানে এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া আর সে কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে বিচার চাইলাম। আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার ওপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনও সলিউশন না, কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইছিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন, আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না, এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজারটা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনও গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করছি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার।’
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা