সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : “প্রজন্ম সমতায় এগিয়ে চলি, নারীর অধিকার অর্জন করি”- এই স্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার (৮ মার্চ ) বিকাল ৪ টায় সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার শুরুতে সংগীত পরিবেশ করেন শিল্পী মাহফুজা আক্তার রুমি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে ইউএন উইমেন, বাংলাদেশ সরকার এবং আমাদের সংগঠন ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্য স্লোগান নির্ধারণ করেছে। এদের ভিন্ন বক্তব্য থাকলেও প্রেক্ষিত একই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৭১ সনে গণতান্ত্রিক, মানবিক ও নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। কিন্তু এখনো সকল ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই নারীকে করতে হচ্ছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মাহতাবুন নেসা। তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপের জন্য ৮মার্চের পর নানাবিধ নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন: সিডও সনদ, বেইজিং ঘোষণা , জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট ঘোষণা। বাংলাদেশের সংবিধান এই নীতিমালাগুলোর সাথে অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ। এরই ফলে নানাক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হচ্ছে। শুরুর দিকে এই দিবসটি পালিত হত খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে, এটি যে এত বৃহৎপরিমন্ডলে পালন করা হবে সেটি কখনো ভাবিনি। সমাজ বদলের সাথে সাথে নারী আন্দোলন গড়ে উঠেছে ভিন্নভাবে। নারী দিবসের গুরুত্ব একেক দেশে একেক রকম। ইউএন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করার পরও নারীর প্রতি বৈষম্য থেকেই যাচ্ছে।
সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অর্জনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি প্রতিষ্ঠার ভিত রচিত হয় ৮ই মার্চ ১৮৫৩ সনে। ১৬৭ বছর আগে দিনটির সূচনা হয়। যদিও সকল দেশের নারী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নারীর অধিকার মানবাধিকার।
তিনি বলেন, এই প্রত্যয়কে ধারণ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৯৭৩ সন থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে কিন্তু নারীর চলার পথ এখনো মসৃণ নয়। যতদিন সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে না ততদিন নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হয়েছে এটি বলা যাবে না।
আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, ৮ ই মার্চ হচ্ছে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি হিসাব করার দিন। ১৯৭৫ সনে যেহেতু জাতিসংঘ এই দিনকে নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু দিনটি পালন করা হচ্ছে। যদি বলা হয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী দিবস পালনে পাইওনিয়ার তাহলে সেটা ভুল হবে না।
ঢাকা মহানগর কমিটির তরুণী সংগঠক ও সদস্য খালেদা ইয়াসমিন কনা বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমান। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে এগিয়েছে কিন্তু নারীর সামাজিক বিকাশ সমভাবে হয়নি। এতে সহিংসতা বেড়েছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
উক্ত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, সদস্যমন্ডলী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সংগঠক এবং কর্মকর্তাসহ ১২০ জন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক উপপরিষদ সদস্য সিউতি সবুর।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা