সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ সমতা, নারীর সম-উপস্থাপন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে সকলকে নিজ নিজ ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে রবিবার (৮ মার্চ) ১১০তম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারীর জন্য গণমাধ্যম বিষয়ক ১৫ দিনব্যাপী একটি প্রচারাভিযান শুরু করছে বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) ।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে গণমাধ্যমে নারীর অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা-এই প্রতিপাদ্যে সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম তথা সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালসমূহকে বিবেচনায় রেখে ৮ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত ১৫ দিনব্যাপী এই প্রচারাভিযান পরিচালিত হবে। ৪৫টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট বেসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এই প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করছে।
প্রচারাভিযানের উদ্দেশ্য হলো গণমাধ্যমে নারীদের কাজের ধরণ, অবস্থান ও উপস্থাপনে নারীর যথোপযুক্ত মূল্যায়ন বিবেচনায় তাদের পুরুষ সহকর্মীসহ সকলের গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও কার্যকর ভূমিকা পালনে পারস্পরিক সংলাপ আয়োজনে উৎসাহিত করা।
৮ মার্চজাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। মার্চ মাস বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয়, এই মার্চ মাসেই শুরু হয়েছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯২০ সালের এ মাসের ১৭ তারিখেই জন্ম নিয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই এ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্ম-শতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’। আর এ জন্যই বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। মুজিব বর্ষে শপথ নিয়ে গণমাধ্যমে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
সারা বিশ্বে গণমাধ্যম উন্নয়ন নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলোর নারী সাংবাদিকদের বিষয়ে নানাবিধ উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও নারী সাংবাদিকদের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং এখনো দুঃস্বপ্ন। ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স’ অনুযায়ী বর্তমান সমাজে নারী-পুরুষের অসমতা এতই প্রবল যা সমতায়ন করতে গেলে প্রায় ১০৮ বছর সময় লেগে যাবে। এ জন্য নারী-পুরুষের সমতায় বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম বিশেষ করে নারীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় প্রণোদনাসহ সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি। তাই গণমাধ্যমে নারীদের প্রতি সংবেদনশীল তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন এখন সময়ের দাবি।
গণমাধ্যম, তথ্য এবং বিনোদন শিল্পে কর্মরত নারীদের অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা বিষয়ে ব্যাপক নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। গণমাধ্যমে কর্মরত নারীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদেরকে রি-স্কিলিং, আপ-স্কিলিং ও ডি-স্কিলিং করতে হবে।
প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম তথা- জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালসমূহের কার্যালয়ে বিশেষ আলোচনা ও পর্যালোচনা সভা এবং কমিউনিটি রেডিও এলাকায় সংবাদপত্র, রেডিও ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত নারী সাংবাদিকদের অবস্থা ও অবস্থান এবং সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
নারী ও পুরুষ সমতা একটি মানবাধিকার, তাই মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানমালায়ও এর অনুশীলনে সকলের কার্যকরী উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।
নারী-পুরুষের সমতা বা সর্বজনীন মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম কর্মী উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। উক্ত প্রচারাভিযানের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সম্পাদক, মালিকপক্ষসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে নিম্নোক্ত আহবান আহ্বান জানিয়েছে ।
প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে ইউনেসকো কর্তৃক তৈরিকৃত অনুশীলন; গণমাধ্যম, তথ্য এবং বিনোদন সেক্টরে কর্মরত সাংবাদিকদের বিশেষ করে নারীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্রুত রি-স্কিলিং , আপ-স্কিলিং ও ডি-স্কিলিং করণে উদ্যোগ গ্রহণ; চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন করে গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনা ও গণমাধ্যমে ব্যবসায়িক মডেল প্রবর্তনে উদ্যোগ গ্রহণ; গণমাধ্যমে কর্মরত নারীর অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা যাচাই এর লক্ষ্যে গবেষণা এবং এর ফলাফল ও সুপারিশমালার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং রিপোর্টার্স ইউনিটিসমূহে পদ/পদবী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী ও পুরুষ গণমাধ্যম কর্মীদের সমঅংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিতকরণে অনুশীলন; প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীদের নারী-পুরুষের অসমতা বিষয়ক প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞাপনসহ প্রতিবেদন ও সংবাদ পরিবেশনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখা।
এই প্রচারাভিযানের জন্য একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে
(www.media4women.bnnrc.net)
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা