বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কোন ত্রুটি নেই বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বোর্ডের প্রধান ডা. জিলন মিয়া।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের বি ব্লকে শহীদ ডা. মিলন হলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. জিলন মিয়া এসব কথা বলেন।
ডা. জিলন মিয়া বলেন, জীবন আল্লাহর দান, আল্লাহই রক্ষা করবেন। আমাদের কোনো ধরনের ত্রুটি নেই। খালেদা জিয়াকে দেখার ব্যাপারে আমাদের বিন্দুমাত্র কার্পণ্যতা নেই। চরম পর্যায়ের সতর্কতা নেওয়া হয়। তিনি যেভাবে চান সেভাবেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনিও সন্তুষ্ট বলে মনে করি। কারণ তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী তো অনেক বড় ব্যাপার।
তাকে কখন কারাগারে পাঠাতে হবে এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. শাহানাজ আক্তার বলেন, বায়োলজিষ্ট চিকিৎসা নিতে হলে তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে। না নিলে বর্তমানে যে চিকিৎসা চলছে তা তিনি কারাগারে বা বাড়িতে নিতে পারবেন। তবে তাকে যে চিকিৎসক ভ্যাকসিন নিতে বলেছেন তা নিতে হলে অবশ্যই তাকে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। সেই ভ্যাকসিন নিতে এখনো ওনার অনুমতি মেলেনি। কেন অনুমতি দিচ্ছেন না তা বোধগম্য নয়। হয়ত তিনি অনুমতি দেবেন এবং ভ্যাকসিন দিতে বলবেন। আমরা নিয়মিত চেক আপের সময় এ ব্যাপারে কথা বলছি।
এদিকে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে একটি ভ্যাকসিন নয় বরং তাকে তিনটি ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসক দল পরামর্শ দিয়েছেন। এরমধ্যে বাত, নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিনও রয়েছে। তিনি একটি ভ্যাকসিনও দিতে অনুমতি দেননি।
২৫ অক্টোবর পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের পর আবারো খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আসে। এসশয় তার বড় বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, কারও সাহায্য ছাড়া বসতে পারে না। তার হাত বেঁকে গেছে, কথা বলতেও তার কষ্ট হচ্ছে। ওজন কমে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে তার পঙ্গু হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।
আদালতের নির্দেশে ১ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়। ৬২১ নম্বর কেবিনে আছেন তিনি। আর তার সঙ্গে যারা রয়েছেন, ৬২২ নম্বর কেবিনে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে তার চিকিৎসার জন্য ২৮ মার্চ মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জিলন মিয়াকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন ডা সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. তানজিমা পারভিন, ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, ডা. চৌধুরী ইকবাল মাহামুদ। এছাড়া ডা. শামিম আহমেদ এবং ডা. মামুন মেডিক্যাল বোর্ডকে সহযোগিতা করছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে নেওয়ার পর (গত মাসে, এপ্রিলে) এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবিএম মাহবুবুল আলম জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলে তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তার পায়ে ও জয়েন্টে ব্যথা আছে, ডায়াবেটিস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, শরীর দুর্বল, ঘুম কম হয়, খাওয়ার রুচি কমে গেছে। এছাড়া হাঁটার সময় অন্যের সহযোগিতা নিচ্ছেন বলেনও জানানো হয়েছিল সেসময়।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানার আদেশ দেন আদালত। ওই রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। বিএসএমএমইউতে স্থানান্তরের আগে তিনি সেখানেই ছিলেন।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা