সংবাদ সম্মেলনে ড্যাব'র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখছেন
বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হলেও তার চিকিৎসা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সত্য গোপন করা হচ্ছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) একথা বলেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ আবদুস সালাম।জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, খালেদা জিয়া বাতজনিত আর্থ্রাইটিস, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। এ অবস্থায় তিনি জেলখানায় সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় এবং স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় উক্ত রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। আমরা মনে করি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নি:শেষ করার অপপ্রয়াসে তার স্বাস্থ্য নিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, একাধিক রোগে জটিলতার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার হাত ও পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলো সহ বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং তাতে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে। শুধু তাই নয় জয়েন্টগুলো শক্ত এবং বাঁকা হতে চলেছে যা অচিরেই স্থায়ী রুপ ধারণ করতে পারে। ফলে বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, ওঠাবসা এমনকি হাতে খাবার পর্যন্ত খেতে পারছেন না।
তিনি বলেন, সবাই জানেন বেগম খালেদা জিয়া চরম অসুস্থতায় ভুগছেন। আসলে তিনি ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তার যথাযথ চিকিৎসা না দিলে এই অবস্থা স্থায়ী রুপ নিতে পারে। অথচ বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সরকারের অশুভ ইশারায় জাতিকে বিভ্রান্ত করতে এবং বেগম খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন ভন্ডুল করতে সত্য গোপন করছেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন যা খুবই দুঃখজনক। বিএসএমএমইউর পরিচালক বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসহযোগিতার কারণে চিকিত্সকেরা তার সাথে দেখা করতে পারেননা।যা সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের জানামতে বেগম খালেদা জিয়া সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের কখনো বাধা প্রদান করেননি বরং সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যা মেডিকেল বোর্ডের প্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
তিনি জানান যে, বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলেন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেন স্বাছন্দে। ড্যাবের মহাসচিব বলেন, এ কথা সবাই জানেন যে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজে পায়ে হেটে জেলখানায় প্রবেশ করেন। প্রথমবার যখন বিএসএমএমইউতে আসেন তখন গাড়ি থেকে নেমে নিজে লিফট পর্যন্ত হেঁটে যান। সময়ের পরিক্রমায় তিনি কেনো আজকের অবস্থায় উপনীত হলেন সে প্রশ্ন জাতির কাছে। তিনি সুচিকিৎসা পেলে এমন অবস্থা হতো না। সুতরাং বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য সত্য্যের অপলাপ মাত্র।
ডাঃ আবদুস সালাম বলেন, খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ। তার যথাযথ চিকিৎসা না হলে যে কেনো সময় তার শারীরিক স্থায়ী পঙ্গুত্ব এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ জনিত বড় সমস্যা হতে পারে। তবে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার দায়ভার বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট চিকিতসক ও সরকারকেই নিতে হবে। সুতরাং আমরা ড্যাবের পক্ষ থেকে জটিল পরিস্থিতি হওয়ার আগেই খালেদা জিয়ার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা তার সুচিকিতসার ব্যাবস্থা করা হোক। তাকে জামিন দিয়ে মুক্ত পরিবেশে পছন্দ মতো হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়া হোক। অন্যথায় চিকিতসক সমাজ বসে থাকবেনা। তারা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন গড়ে তুলবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর সাবেক প্রোভিসি ডা: এমএ মান্নান, ড্যাবের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদ, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা: এমএ সেলিম, ড্যাব নেতাদের মধ্যে ডা: মাজহারুল ইসলাম দোলন, ডা: কাকন, ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা: এরফানুল হক সিদ্দিকী, খালেকুজ্জামান দীপু, ডাঃ শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডাঃ শেখ ফরহাদ, ডাঃ শামসুল সহ অর্ধশতাধিক ডাক্তার।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা