খাদ্যে হেভি মেটাল, কেমিক্যাল কন্টামিনেশন, পেস্টিসাইড, স্টেরয়েড, হরমোন, এন্টিবায়োটিকের অভিশাপ নিয়ে কেউ কাজ করেনি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার ক্যাডার কর্মকর্তা মাহবুব কবির মিলন। তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, দুই বছর হল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে জয়েন করার পর থেকে সব কিছুতে হাত দিতে গিয়ে মাথায় বাজ পড়ল। সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
ওজন মাপার স্কেলের উপর দাঁড়িয়ে আছি। নতুন, স্কেল ভুল নেই। সকালে খালি পেটে। গিন্নি বারবার বলছে ৫৬ কেজি। আমি বলছি ৫৫। তাঁর কণ্ঠে বিরক্তি। আমি বসে দেখছি ৫৬, আর তুমি দাঁড়িয়ে দেখছ ৫৫ কেজি!! তার উপর চোখে চশমা নেই। চশমা ছাড়া তো কিছুই দেখ না!!
আমি আবার বললাম, ৫৬ কেজি হলে আমার অরিজিনাল ওজন ৫৫ কেজি। আর ১ কেজি? অবাক নয়নে গিন্নির প্রশ্ন।
আর ১ কেজি সীসার (লেড) ওজন। সাথে কিছু ক্রোমিয়াম থাকতে পারে। ওটা বাদ দিয়ে ধর।
হতবাক হচ্ছেন সবাই? হ্যাঁ আমাদের অবস্থা বর্তমানে তাই। নিজের ওজন থেকে এক কেজি করে সীসার ওজন বাদ দিয়ে দেবেন।
সামনে যে সংবাদ আসছে বা পাবেন, তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সবাইকে। ধৈর্য্য ধরতে হবে।
ভাবতে অবাক লাগে। এতদিন কি করেছি আমরা? খাদ্যে হেভি মেটাল, কেমিক্যাল কন্টামিনেশন, পেস্টিসাইড, স্টেরয়েড, হরমোন, এন্টিবায়োটিকের অভিশাপ নিয়ে কেউ কাজ করেনি। এমনকি কেউ ভাবেনি পর্যন্ত।
দুই বছর হল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে জয়েন করার পর থেকে সব কিছুতে হাত দিতে গিয়ে মাথায় বাজ পড়ল। আমরা মাত্র ১২ জন কর্মকর্তা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
খাদ্যে ভেজালের ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। অনেকেই নির্বিচারে ঢোল পিটিয়ে গেছেন বা যাচ্ছেন, আমাদের খাদ্যে কোন ভেজাল নেই।
আমেরিকান সরকার থেকে গত কয়েকদিনে দুইবার নোটিফিকেশন পেলাম আমরা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ইউএস অথোরিটি গত দশ বছর যাবত সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি যারা বাংলাদেশি গুঁড়া মশলা খায় এবং যেসব মশলা বাংলাদেশ থেকে যায় সেগুলোর উপর পরীক্ষা করে মশলা এবং বাংলাদেশিদের রক্তে মাত্রার উনেক উপরে লেড বা সীসা পেয়েছে। ইউএস গভীর উদ্বেবেগের সাথে দশ বছর যাবত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমাদের কাছে এর ফয়সালা চেয়েছে।
হেভি মেটাল কেউ ইচ্ছা করে দেয় না। এটা পরিবেশ, মাটি, পানি, পশু বা প্রাণি, মৎস্য এবং পোল্ট্রি খাদ্য, কিটনাশক, ফার্টিলাইজার কিংবা অন্য কোন মাধ্যম থেকে সব খাদ্যে প্রবেশ করতে পারে।
আবার বলছি সময় দিতে হবে আমাদের। অনেক সময় লাগবে এসব দূষণ দূর করতে। সারা দেশের সব কিছু পরীক্ষা করে সব দুষণের রুট মা মূল বের করে তা দূর করতে হবে।
খাদ্য শিল্প মালিকদেরও সময় ও সুযোগ দিতে হবে। তাঁরাও সচেতন হচ্ছেন এবং ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। আমরা আশাবাদী, পারব আমরা ইনশাআল্লাহ।
প্রাণি এবং মতস্যের ফিড নিয়ে কাজ শুরু করেছি আমরা। দুষণ্মুক্ত ফিডের নিশ্চয়তা আসছে এই বছরেই ইনশাআল্লাহ। ভাবতেই পারবেন না কি অব্যবস্থা আর টাকা ইনকামের ধান্ধা ছিল এই সেক্টরে।
নো কম্প্রোমাইজ। হাজার তদ্বির আর ক্ষমতা দেখান বা চেষ্টা করেন, আমরা যা ধরব বা ধরেছি, তার থেকে মুক্তি নেই আপনাদের।
আমাদের বাচ্চাদের বাঁচাতেই হবে আমাদের, দিতে হবে তাঁদের সুস্থ জীবনের নিশ্চয়তা। আল্লাহ আমাদের সহায়, আর আপনাদের ভালবাসা।
NB:This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা