অনলাইন ডেস্ক
কুষ্টিয়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন ও ‘উপসর্গ’ নিয়ে আরও ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনায় ১৩ জন ও ‘উপসর্গে’ ছয় জন এবং কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় একজন ও নিজ বাড়িতে করোনায় একজন মারা গেছেন।
রোববার করোনা ইউনিটে ১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন।
কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন জানান, এখানে মৃত দু’জনের বাড়িই উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নে।
২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা আক্রান্ত এবং ‘উপসর্গ’ নিয়ে রোববার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৩ জনে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ২০৫ জন। আর ‘উপসর্গ’ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৬৮ জন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, শয্যা না থাকায় এখন রোগীদের মেঝেতে রাখতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং ‘উপসর্গ’ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে সেবা প্রদান করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে তীব্র অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বৃহৎ আয়তনের এ উপজেলাতে ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৩০ জনের মতো করোনা রোগীর চিকিৎসা চলছে, যার মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, হঠাৎ করে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যে কয়টি অক্সিজেন বর্তমানে রয়েছে জরুরি প্রয়োজন হলে এক রোগীর কাছ থেকে খুলে নিয়ে আরেক রোগীকে দিয়ে সাময়িক ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, ৪৮টি সিলিন্ডার দিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তা সামাল দিতে আরও অন্তত ১০০ সিলিন্ডারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরঞ্জাম প্রয়োজন। এছাড়া এই হাসপাতালে কোন মেডিসিন কনসালটেন্ট নেই। চিকিৎসকরাও করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬০৯টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ১৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬৯ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল আট হাজার ৪৭৫ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৮৯ জন। মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৩০ জনে।