একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হলেও তাকে ‘শহীদ’ উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় দৈনিক সংগ্রাম অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন।
এক পর্যায়ে পত্রিকাটির কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালায় সংগঠনের উত্তেজিত জনতা। পত্রিকাটির সম্পাদক আবুল আসাদকে হেনস্তা করার সময়ে হাতিরঝিল থানা পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকায় অবস্থিত সংগ্রাম কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে ফাঁসি কার্যকর করা হয় কাদের মোল্লার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা সংগ্রাম কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। ওই সময় তাদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনও কর্মসূচিতে অংশ নেন। তারা যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ লেখায় সংগ্রামের সম্পাদক, প্রকাশক ও সংশ্নিষ্ট প্রতিবেদকের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন এবং বিচার দাবি করেন।
এ সময় সংগ্রামের কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে সংগ্রাম অফিসে ঢুকে পড়ে। সংগ্রাম কর্মীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির সময়ে কয়েকজনকে লাঠি হাতে অফিসের ভেতর ভাঙচুর করতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা অফিসটি তালাবদ্ধ করে দেয়।
জামায়াতের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত সংগ্রামে গত বৃহস্পতিবার প্রথম পাতায় ‘শহীদ কাদের মোল্লার ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী আজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত দু’দিন ধরেই ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছিল। ফেসবুকে এমন প্রতিবেদনকে যুদ্ধাপরাধীদের ধৃষ্টতা উল্লেখ করে পত্রিকাটি বন্ধেরও দাবি ওঠে।
গতকাল বিক্ষোভ চলাকালে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাকে শহীদ বলার মাধ্যমে তারা দেশের শহীদদের অবমাননা করেছে। দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। আমরা চাই সরকারিভাবে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হোক। আমরা পত্রিকার মেইন গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।’
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, ‘বিজয়ের মাসে একজন রাজাকার, দেশদ্রোহী কাদের মোল্লাকে সংগ্রাম পত্রিকা শহীদ অভিহিত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তারা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই কাজের জন্য পত্রিকার সম্পাদক, রিপোর্টারসহ সংশ্নিষ্টদের জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
এদিকে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, উত্তেজিত লোকজন সংগ্রাম কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পত্রিকাটির সম্পাদককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বড় মগবাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা