অনলাইন ডেস্ক
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে ঢাকায় ১৭ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। এর মধ্যে ১১ জনই কোভিড-১৯ পজেটিভ, যা মোট কর্মকর্তার ৬৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। বাকি ছয়জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের করোনা উপসর্গ রয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তা, অফিস সহকারী ও গাড়িচালকসহ অধিদফতরে মোট ১৫ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত।
করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে হওয়ায় অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজধানী ঢাকায় নিয়মিত বাজার অভিযান বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য স্বাভাবিক কার্যক্রমও প্রায় স্থবির হয়েছে পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, অধিদফতরের যাদের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে তাদের সঙ্গে নিয়িমিত অফিস করেছি। অভিযানও করেছি। সর্দি, শরীর ব্যথার মতো করোনার কিছু উপসর্গ রয়েছে। যদিও প্রাথমিক পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছে। তারপরও ভয় হয় বলে তিনি জানান।
ওই কর্মকতা আরও জানান, মহাপরিচালক থেকে শুরু করে সিনিয়র বেশিভাগ কর্মকর্তা আক্রান্ত। অফিস চালু আছে কোনো মতে কার্যক্রম চলছে। এ অবস্থায় অভিযান করা খুব বিপজ্জনক। কারণ যে কয়েকজন কর্মকর্তা সুস্থ আছেন তারা আক্রান্ত হলে অফিস বন্ধ করে দিতে হবে।
জানা গেছে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটির মধ্যেও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রতিদিন মাঠে অভিযান পরিচালনা করছেন ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সংকটে, রোজা ও ঈদুল ফিতরে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল এবং সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করেছেন তারা। একই সঙ্গে অধিদফতরের এক ঝাঁক তরুণ কর্মকর্তা ভোক্তা সেবায় সব সময় কাজ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মাসুম আরেফিন বলেন, ঢাকায় ১৭ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১১ জন করোনায় আক্রান্ত। বাকি ছয়জন অফিস করছেন। সরকারের সাধারণ ছুটির মধ্যেও করোনার স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আমরা কাজ করেছি।
প্রতিদিন ছয় থেকে ৭টি টিম রাজধানীর পাইকারি-খুচরা বাজার ও বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। এখন অধিকাংশ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিক কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে সারাদেশে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি আজ শেষে হচ্ছে। রোববার (৩১ মে) থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে। মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানান অধিদফতরের এ কর্মকর্তা।
এদিকে অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মহামারি করোনায় ভোক্তা অধিদফতরে গত ১৩ মে প্রথম আক্রান্ত হন আলোচিত কর্মকর্তা মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এরপর ১৮ মে অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ আরও তিন কর্মকর্তা ও একজন গাড়িচালক করোনায় আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে অফিস সহকারী ও গাড়িচালকসহ মোট ১৫ জন আক্রান্ত হয়।
অধিদফতরের করোনায় আক্রান্তরা হলেন- মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বাবলু কুমার সাহা, উপ-পরিচালক (উপসচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, আফরোজা রহমান, সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা, রজবী নাহার রজনী, তাহমিনা বেগম, রোজিনা সুলতানা,মাহমুদা আক্তার, অধিদফতরের সহকারী হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, নমুনা সংগ্রহকারী আব্দুল কুদ্দুছ, অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আব্দুল ওয়াহেদ, মহাপরিচালকের গাড়িচালক সোহেল আহমেদ, প্রধান কার্যালয়ের গাড়িচালক মিলিয়া খানম ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের গাড়িচালক মো. শরীফ মিয়া।