পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অধিকতর জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বুধবার (১১ মার্চ) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ তাগিদ দেয়া হয়। খবর : বাসস এর। কমিটির সদস্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এম, এ, মান্নান, মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম), সাবের হোসেন চৌধুরী, হাফিজ আহমদ মজুমদার, মোরশেদ আলম, রওশন আরা মান্নান এবং আদিবা আনজুম মিতা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়াধীন হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ অন্যান্য বিমান বন্দরের উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পসমূহের বাস্তব অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়া সভায় কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবমতে সাংসারিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত নারী সমাজের অবদানকে জিডিপি’তে অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় যেসব মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরাদ্দকৃত অর্থের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের পর উদ্বৃত্ত থাকে সেই অব্যবহৃত অর্থ ফেরত নিয়ে যে মন্ত্রণালয়সমূহে পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতার অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিঘিœত হচ্ছে তাদেরকে প্রদান করার বিষয়টি বিবেচনা করার সুপারিশ করা হয়। সভায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এর প্রতিরোধে অধিকতর জনসচেতনতা সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব,পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, আই এম ই ডি এর সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাসে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক করে গঠিত অনুষ্ঠান কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত সভা শেষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ সব তথ্য জানান।
কামাল আবদুল নাসের বলেন, ‘মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরুর পর সমগ্র জাতির মাঝে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সম্পর্কে উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছিল। জনগণের সম্পৃক্ততার আগ্রহকে বিবেচনায় রেখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ভিন্নমাত্রায় পরিবেশিত হবে। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠান না হলেও ১৭ মার্চ বর্ণাঢ্য আয়োজনের পরিকল্পনা ঠিক রাখা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ধারণ করে অথবা লাইভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে প্রচার করা হবে।’
ড. কামাল বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী, জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবসটি জাতীয় শিশু দিবস হওয়ায় শত শিশুর কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের পরিবেশনা থাকবে। এছাড়া শত শিল্পীর পরিবেশনায় যন্ত্রসংগীত, মুজিববর্ষের থিম সং, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মকে তুলে ধরে একটি থিয়েট্রিক্যাল পারফরম্যান্স ও বিশ্বখ্যাত কোরিওগ্রাফার আকরাম খানের পরিবেশনাও থাকবে এই প্রোগ্রামে।’ অনুষ্ঠানটি প্রচারের সময় পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
অনুষ্ঠান কমিটির বৈঠকে ১৭ মার্চ রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণ আতশবাজির মাধ্যমে স্মরণের পরিকল্পনাও রাখা হয়েছে। এছাড়াও দিবসটি স্মরণে আলোকসজ্জা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমিত আকারে আনন্দ অনুষ্ঠান এবং মিষ্টি বিতরণ করা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং কমিটির অন্য সদস্যরা।
এর আগে, জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুজিববর্ষের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল সরকার। একলাখ মানুষের উপস্থিতিতে সেই আয়োজনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আনার পরিকল্পনা হয়েছিল। তবে গত রোববার (৮ মার্চ) দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাসের ঘোষণা দেয় জাতীয় কমিটি।
ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটি এবং জাতীয় কমিটির এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
রাতে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে দেশে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনসমাগম এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনকল্যাণ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানটি হচ্ছে না। জন্মশতবার্ষিকীর সামগ্রিক আয়োজন পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা