অনলাইন ডেস্ক
গত শনিবার ভোর থেকে ওয়ারীর যেসব এলাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে, গত তিন দিনে সেখানকার নমুনা পরীক্ষার অর্ধেকই ভাইরাস সংক্রমিত পাওয়া গেছে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন বিষয়ক কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান তিনি।
মেয়র বলেন, “গত তিন দিনে এখানে সংক্রমণের যে হার আমরা পেয়েছি, যে পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এর মধ্যে ৫০ শতাংশ সংক্রমিত, এটা আমরা লক্ষ করেছি। এই সংক্রমণ থেকে বেরিয়ে আসতে কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন এবং সবাইকে তা মেনে চলতে হবে।”
গত তিন দিনে এই এলাকায় ৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জনের করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে বলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো জানিয়েছেন। শতকরা হিসাবে পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্তের হার দাঁড়ায় ৪৭ শতাংশের বেশি। অপরদিকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১৭৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ২৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এখানে শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশেরও কম।
শনিবার ভোর ৬টা থেকে ওয়ারীর ২১টি রাস্তার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড বসিয়ে সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু দুটি প্রবেশ পথ খোলা রাখা হয়েছে, যেখানে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ছাউনি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাভুক্ত টিপু সুলতান রোড, লারমিনি স্ট্রিট, জাহাঙ্গীর রোড, ওয়্যার স্ট্রিট, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, হেয়ার স্ট্রিট, জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন, র্যাংকিং স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিট এলাকায় ২৫ জুলাই পর্যন্ত এই অবস্থা চলবে।
এসব এলাকায় ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকান-পাট, বিপণিবিতান, স্কুল-কলেজ,সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লকডাউন এলাকায় ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
লকডাউনে এলাকার লোকজনের কষ্ট যাতে কম হয় সেজন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ফজলে নূর তাপস বলেন, “নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, স্বাস্থ্য সেবা যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং আমরা অনুরোধ করব, এই সার্বিক বিষয়টাকে উপলব্ধি করবেন, এই করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এটা আমাদের সকলকে প্রতিপালন করা একান্তই আবশ্যক।”
ধৈর্যের সাথে এই পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, “আমাদের সকলেরই কষ্ট হচ্ছে। আমি অনুরোধ করব- এই কষ্ট সবাইকে মেনে নিয়ে লকডাউন পালন করব। তাহলে এর মধ্যেই এই এলাকা সংক্রমণমুক্ত হতে পারব বলে আশা করছি।”
লকডাউনে ক্ষতির মুখে পড়া ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মেয়র তাপস বলেন, “আমরা অত্যন্ত দুঃখিত, আমরা জানি আপনাদের কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আগে জীবন পরে জীবিকা আহরণ। জীবন না থাকলে জীবিকা আহরণ করা যাবে না।
“সরকার সাধারণ ছুটি উঠিয়ে দিয়েছে, কিন্তু যেসব জায়গা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ সে সব জায়গা লাল চিহ্নিত করা হয়েছে। লাল চিহ্নিত মানেই অত্যন্ত সংক্রমিত এলাকা। দয়া করে এই কয় দিন বাসায় থাকবেন নিরাপদে থাকবেন। পরবর্তীতে আল্লাহর রহমতে জীবিকা আহরণে অংশ নিতে পারবেন। লকডাউনের গুরুত্ব অনুধাবন করবেন।”
কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে সবাইকে আরও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের কোথাও কোনো ঘাটতি আছে কি না সেটা দেখার জন্যই আমরা এই সমন্বয় সভা করেছি। এর মধ্যে আসা-যাওয়া একেবারেই বন্ধ করতে চাচ্ছি। আমরা আরও কঠোর হচ্ছি।”
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা