পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে জিপিএ ৪ করার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড।
বোর্ড চেয়ারম্যানরা প্রস্তাব চূড়ান্ত করে তা অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এ কাজে নেতৃত্ব দেয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, সরকার চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং ২০২১ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে জিপিএ ৪-এ প্রকাশ করতে চায়।
এই লক্ষ্যে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে কাজ শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে মিল রেখে জিপিএ ৪-এর গ্রেডিং বিন্যাস চূড়ান্তকরণে সব বোর্ডের পক্ষ থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
চূড়ান্ত গ্রেড বিন্যাসে দেখা যায়, পাবলিক পরীক্ষায় পূর্ণমান ১০০ নম্বরের ভেতরে ৯০ থেকে ১০০ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে ৪, যা সর্বোচ্চ ফল।
এরপর ৮০ থেকে ৮৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫, ৭০ থেকে ৭৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘বি পল্গাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩, ৬০ থেকে ৬৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘বি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ২.৫, ৫০ থেকে ৫৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘সি প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ২, ৪০ থেকে ৪৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘সি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ১.৫, ৩৩ থেকে ৩৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এফ’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে ১ এবং শূন্য থেকে ৩২ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এফ’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে শূন্য।
জানা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রথমে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন গ্রেড বিন্যাস তৈরি করে। এরপর গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর দুটি ভিন্ন ভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে। এতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন। নানা গবেষণা ও বিচার-বিশ্নেষণ করে একটি গ্রেড বিন্যাস চূড়ান্ত করা হয়।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সমকালকে বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
যেহেতু আগামী জেএসএসি থেকেই এই গ্রেড কার্যকর হওয়ার কথা, তাই গেজেট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা প্রচার করে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেব।’
বর্তমানে দেশে পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫-এ ফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ফল প্রকাশ করা হয়। আর বিশ্বের অন্যান্য দেশে সব ধরনের ফলই প্রকাশ করা হয় জিপিএ ৪-এ।
ফলে এসএসসি আর এইচএসসির ফলের সঙ্গে উচ্চতর শিক্ষার ফলের সমন্বয় করতে গিয়ে দেশের চাকরিদাতারাই সমস্যায় পড়েন। আবার বিদেশে পড়ালেখা করতে গিয়েও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়েন।
তাই সবদিক বিবেচনা করে সব ধরনের ফল জিপিএ ৪-এ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গ্রেডিং চূড়ান্ত করলে আগামীতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায়ও একই গ্রেডিংয়ে ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতি চালু হয়।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা