কোনো সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী নিজের সংসদীয় এলাকার জনগণের পাশে এ মুহূর্তে না থাকলে তাদের তালিকা করতে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও বিশেষ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য (এমপি), মন্ত্রিসভার সদস্যসহ শীর্ষ নেতাদের এলাকার জনগণের পাশে দাঁড়াতেও নির্দেশনা দেন দলীয়প্রধান।
নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে। দলের সভাপতির নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনগণের পাশে দলীয় সহায়তা কার্যক্রম নিয়ে নেতাকর্মীরা এখন আছেন বলে দাবি দলটির শীর্ষ নেতাদের।
সূত্র বলছে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার আগে ও পরে কয়েক মন্ত্রীর এ বিষয়ে ‘অগোছালো বক্তব্য’ থেকে দেশের মানুষ রোগটির প্রতিরোধে সরকারের প্রস্তুতি ও কার্যক্রম নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না। তখন থেকেই তারা প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনার কাছ থেকে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ ও বক্তব্য প্রত্যাশা করছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। এতে তিনি এ মুহূর্তে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে মানুষকে প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার কথা জানান।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনার পর করোনা মোকাবিলায় সরকারের কার্যক্রম আরো গতি পেয়েছে। ভাইরাসটি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এ মুহূর্তে করণীয় যে ছয়টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশও এখন এসব বিষয়ে যথাসম্ভব প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে কিছু কাজ বাংলাদেশ আগেই শুরু করতে পারত বলে মনে করেন তারা। এ ছাড়া বৈশ্বিক রোগ করোনায় গোটা পৃথিবী আক্রান্ত হওয়ায় এক দেশ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল রোগটির পরীক্ষার যন্ত্র, চিকিৎসাসামগ্রী, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা উপকরণ, বিশেষজ্ঞ সেবা ও অন্যান্য সহায়তার জন্য।
করোনা প্রতিরোধে সারা দেশের সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ভাইরাসটি রোধে সতর্কতা হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কাজের ক্ষেত্র বন্ধ থাকায় অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তাদের ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচির আওতায় নিজ নিজ গ্রামে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য এবং নগদ টাকা দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে গ্রাম পর্যায়ে সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সংগ্রহে যারা কাজ করবেন, তাদের মধ্যে সবার প্রশিক্ষণ দেওয়া এখনো শুরু হয়নি। হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও প্রশাসনের লোকদের এখনো পুরোপুরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘দেশের ৬৪ জেলা পর্যায়ের এবং ১০০টি উপজেলার কর্মীদের ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইপিআইয়ের মাঠকর্মীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে লাগানো হবে। জেলা সদর হাসপাতালগুলোকে করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসায় ব্যবহারের চেষ্টা চলছে।’
করোনা রোধে বিভিন্ন জেলায় জীবাণুনাশক ছিটানোর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। বৃত্ত এঁকে নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে কেনাকাটা ও নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে টহল দিচ্ছেন তারা। হোম কোয়ারেন্টাইন মানতেও বাধ্য করা হচ্ছে।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা