মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। কথিত সেই রাজাকারের তালিকায় এবার পাওয়া গেলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মো. মজিবুল হক বা নয়া ভাইয়ের নাম। যাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘হক চাচা’ বলে ডাকতেন।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মুজিবুল হকের প্রচেষ্টায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা রাজাকারমুক্ত হয়েছিল। অথচ দেশের জন্য নিরলস কাজ করে যাওয়া এই মানুষটিরও ঠাঁই হয়েছে রাজাকারের তালিকায়।
মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় তার নাম আসায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বরগুনার সর্বস্তরের মানুষ। মঙ্গলবার বরগুনা শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
মজিবুল হকের মেজো ছেলে অ্যাডভোকেট রেজাউল হক শাহীন গণমাধ্যমকে জানান, ১৯৭১ সালে তার বাবা ছিলেন পাথরঘাটা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান। সেই মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। টানা ৪০ বছর ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এমন একজন ত্যাগী মানুষের মৃত্যুর পর এভাবে সম্মানহানির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার পরিবার ও এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ।
অ্যাডভোকেট রেজাউল আরও বলেন, এ যে কী লজ্জার তা আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বুঝেছি। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন আমার মা নুরজাহান বেগম (৮৫)। কারণ বাবার রাজনীতির কারণে সবচেয়ে বেশি সাফার করেছেন আমার মা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তার বাবা উল্লেখ করে রেজাউল হক আরো বলেন, ‘বাবা ঢাকায় আসলেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইতেন। যতবার বাবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন ততবারই অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া। বাবা ওখানে গিয়ে চিরকুটে নিজের নামটা লিখে বলতেন আমার নামটা দেখলেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডাকবেন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাভাজন নয়া চাচার চিকিৎসার ব্যবস্থা খোদ শেখ হাসিনাই করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাবা একবার ডাক্তার দেখাতে ঢাকা এসেছিলেন। সেবারও তিনি চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার আগে দেখা করার জন্য যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার কথা শুনে বলেন, আপনি কোথায় ডাক্তার দেখিয়েছেন? আপনার চিকিৎসা হয়নি। আগামীকাল আমার কার্যালয়ে আসবেন। আমি আপনার চিকিৎসা করাবো।’
মজিবুল হক ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (পাথরঘাটা-বামনা) সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি পাথরঘাটা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল বলেন, “মজিবুল হককে আমরা একজন সজ্জন মানুষ হিসেবেই চিনতাম। তার নাম রাজাকারের তালিকায় আসাটা দুঃখজনক।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা