অনলাইন ডেস্ক
শিল্পাঞ্চল পুলিশের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৬৩০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও খুলনার চিত্র এটি। তবে অন্যান্য জায়গায় কতসংখ্যক কারখানা বন্ধ হয়েছে, তার হিসাব পাওয়া যায়নি। শিল্পাঞ্চল পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, যেসব কারখানা করোনাকালে বন্ধ হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ১৩০টি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ৭২টি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ২৩টি মিল রয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাকের চাহিদা কমেছে। চাহিদা না থাকায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এছাড়া যেসব কারখানা বন্ধ হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই সাব-কন্ট্রাকটিং করত। মূল অর্ডার কমে যাওয়ায় তাদের অসুবিধা হয়েছে বেশি। তিনি বলেন, যে কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে সেগুলোতে গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ শ্রমিক বেকার হয়েছেন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে। তিনি আরো বলেন, করোনাকালীন আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে সুতার দামও বেড়েছে। এতে অনেক কারখানা লোকসান গুনছে।
অর্থনীতিবিদ ও শিল্পমালিকেরা বলছেন, বাংলাদেশে গত বছরের (২০২০) মার্চ মাসে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে। মাঝখানে পরিস্থিতির উন্নতি হলে অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় ফিরতে থাকে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পরিস্থিতি দ্রুত পালটাতে থাকে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চললে অর্থনীতিতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে বলে তারা মনে করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। একই সময়ে এলসি খোলা বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এলসি খোলা কমেছিল ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। আমদানি বেড়েছিল ১ দশমিক ৬০ শতাংশ। কিন্তু পুরো অর্থবছরের হিসাবে এ খাতের আমদানি কমেছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি সময়ে শিল্পের মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলা বেড়েছে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি কমেছে ১৪ দশমকি শূন্য ৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে আমদানি কমেছিল ১৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলা কমেছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আমদানি কমেছে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এলসি খোলা কমেছিল ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ এবং আমদানি কমেছিল ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
এদিকে, বিভিন্ন কারখানায় উত্পাদন কমে যাওয়ার ফলে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খোলার হারও কমে গেছে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায়েও চাপ পড়ছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা