অনলাইন ডেস্ক
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২ শতাংশ জায়গায় প্রতিটি ঘরে দুটি কক্ষ রয়েছে, সঙ্গে রয়েছে রান্নাঘর ও শৌচাগার। প্রতিটি ঘরের চারপাশে খোলা জায়গা রয়েছে, যেখানে উপকারভোগীরা চাইলে শাকসবজি আবাদ করতে পারবেন। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এসব পরিবারের হাতে ঘরের মালিকানাসহ দলিল তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ সদর, বরগুনা সদর, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, ফরিদপুরের নগরকান্দায় সংযুক্ত আছেন তিনি। শুনছেন ঘর পাওয়া উপকারভোগী নিঃস্ব এসব মানুষের অনুভূতি।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হতে এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এবারের ঘর হস্তান্তর শেষে মোট দেড় লাখ গৃহহীন পরিবার সরকারের উপহারের ঘরের মালিক হলেন। পর্যায়ক্রমে মোট ৯ লাখ গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের ঘর উপহার দেওয়া হবে।
এবার তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় হাজীগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পে বারোখাইন আশ্রয়ন প্রকল্পে জমির মালিকানাসহ বাড়ির দলিল বুঝে পেয়েছেন গহিরা গ্রামের শামসুন্নাহার।
১৯৯৭ সালে নদীভাঙনে ভিটেমাটি সব হারান। এরপর থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে তার যাযাবরের জীবন। স্বামী দিনমজুরের কাজ করে যা পান, তাতে তাদের সংসার চলে না। এর মধ্যে বাসা ভাড়ার টাকা জোগাড় করা তাদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দেয়। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা কিভাবে চালাবেন তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিলো না তাদের। তবে এখন তাদের চিন্তা নেই। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মডেল-আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধমে জমিসহ বাড়ি পেয়েছেন শামসুন্নাহার।
‘এমন সময় গেছে যখন মেঘ দেখলেই ভয় লাগতো। ঘরবাড়ি রাইখা আরেক জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিছি। বাড়িঘর উড়ে গেছে। আর শেষমেষ তো নদী ভাঙনে সব শেষ। খুব কষ্ট করছি, সারাদিন চিন্তা করতাম পোলাপান দুইটার কী হবে? এখন চিন্তা নাই। অন্তত পোলাপানগুলা মাথার উপর ছাদতো পাইছে’, বলছিলেন তিনি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি খাস জায়গা কিংবা দখল হওয়া জায়গা দখলমুক্ত করে। যেখানে এ ধরনের জমি নেই সেখানে জমি কিনছে সরকার। ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে বিপুল পরিমাণ বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সারাদেশের এখন পর্যন্ত এমন ৫ হাজার ৫১২ একর খাস জমি উদ্ধার হয়েছে জানিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বলেন, এই জমির স্থানীয় বাজার মূল্য তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় তৃতীয় ধাপের বাড়িগুলো বেশি মজবুত আকারে নির্মাণ করা হচ্ছে। আগে ইটের ভিত ও কলাম ছিল। এবার আরসিসি ঢালাইয়ের ওপর গ্রেট বিম ও কলাম দেওয়া হয়েছে। আগে শুধু জানালা ও দরজায় লিংটেল ছিল। এখন পুরো ঘরে দেওয়া হয়েছে লিংটেল।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ঘর নির্মাণের বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ধাপে এর পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯১ হাজার। আর প্রথম ধাপের চেয়ে ৮৮ হাজার ৫০০ এবং দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা বেড়ে তৃতীয় ধাপে বাড়িপ্রতি বরাদ্দ ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা