অনলাইন ডেস্ক
এ বিষয়ে সরকার থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে বলেও জানান তিনি। তবে নতুন কমিটি গঠনে সার্চ কমিটি নিয়ে কোনো কথা হয়নি এবং তারা এ জন্য কোনো নামও প্রস্তাব করেননি বলে জানান দলটির নেতারা। রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটির কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ এ কথা বলেন।
সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, `সার্চ কমিটি গঠনের আমাদের কাছে কোনও নামও চায়নি। তাই আমরাও কোনও নাম প্রস্তাব করিনি। সার্চ কমিটি নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি।`
এই সময় দলটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, `আমাদের সঙ্গে সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে কথা বললে তো নাম দেব, নাম চাইলে তো নাম দেব। আমাদের সঙ্গে এ নিয়ে কোন কথা হয় নি, নামও চায়নি।` ন্যাপের কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, `ভোটধিকার জন্য আমরা সবাই যেন ভোট কেন্দ্রে যেতে পারি। সেখানে যেন কোনও মন্ত্রী-এমপি প্রভাব খাটাতে না পারে। এই ধরণের প্রস্তাবগুলো আমরা দিয়েছি।`
আইন ছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠন হলে ন্যাপ সেটা মেনে নিবে কি না জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, `এটা যখন কমিশন গঠন হবে, তখনকার বিষয়। তখন ইসি কি ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। জনগণ ভোট দিতে যেতে পারছে কিনা, ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ঠিক রাখতে পারছে কিনা, সেটার ওপর নির্ভর করছে।`
আপনার কি তাহলে সার্চ কমিটির বিপক্ষে জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, `আমরা বলছি, আইন করতে হবে। সার্চ কমিটির পক্ষে না, বিপক্ষে সেই বিষয়টি সংলাপে আসেনি।`
আপনাদের প্রস্তাবের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি কি বলেছে জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, `তিনি বলেছেন, আপনারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন। ফলে, আমি আমার ক্ষমতার মধ্যে থেকে জনগণের যে দাবি, আপনাদের যে দাবি তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখন উনি কতটুকু করবেন, সেটা আমরা ভবিষ্যৎতে দেখবো, বুঝবো। এর আগে তো কিছু বলবো না।`
ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, `আজকে সংলাপের বিষয় ছিলো নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে। সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে সংলাপ ছিলো না। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে বির্তক তা নিরসন করতে আইন প্রণয়ন করতে হবে। আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়ে সময় পাচ্ছি না, এই এক ধরণের কথা। আর আইনের উদ্যোগ না দিয়ে সময় পাচ্ছি না, এটা আরেক ধরণের কথা। আমরা মনে করি আইন প্রণয়নে এখনি উদ্যোগ নেওয়া উচিত।` সরকারের সঙ্গে থাকা ১৪ দলের শরিক ন্যাপ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে সেখানে সার্চ কমিটি গঠনের চরম বিরোধীতা করেছেন তারা।
রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, `২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হবার পর তকালীন রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি গঠন করে ২০১৩ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিনের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সাহেবের সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠন হয় এবং ২০১৮ সালে একই পদ্ধতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ.কে.এম নুরুল হুদার অধীনের জাতীয় নির্বাচন এবং তৎপরবর্তী নির্বাচনসমূহের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।` “প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে যথেচ্ছ টাকার ব্যবহার, অস্ত্রের মহড়া, ভোট কেন্দ্রের বুথ দখল ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন এসব অঘটনের প্রতিকারের বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। নির্বাচনে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো উদ্ধার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয় নি। তবুও সরকারের পক্ষ থেকে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে আবারো ইসি গঠনের কথা বলা হয়েছে। সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইতোপূর্বে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল এমন নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না।”
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের জানান, `বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্র্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্যকরী সভাপতি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে ৭ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনাসমূহ হলো, সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন। দক্ষ, সৎ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচন কমিশনকে একটি জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা।`
“রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই এ আলোচনার মূল উদ্দেশ্য। রাষ্ট্রপতি আশা করেন, পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে“
আইভি আহমেদের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের দলের অন্য সদস্যরা হলেন-সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, কাজী সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আহমেদ খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পার্থসারথি চক্রবর্তী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কৃষি অনিল চক্রবর্তী।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা