ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের আলোচিত কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে শুক্রবার ভোর রাতে জেলা সদর থেকে আটক করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামান্য পিয়ন পদে চাকরি করে ইয়াছিন অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। জেলা শহরে রয়েছে তার তিনটি বাড়ি,সঙ্গে তিন স্ত্রীও। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ করলে লাপাত্তা হয়ে যান ইয়াছিন।
জানা গেছে, ২৩ বছর আগে ইয়াছিন সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরি পান। তার মধ্যে ১০ বছর ছিলেন অস্থায়ী হিসাবে। ২০০৬ সালে তার চাকরি স্থায়ী হয়। এরপর নানা সময়ে তাকে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলায় বদলি করা হলেও ঘুরে ফিরে তিনি সদরে চাকরি করেন। প্রায় সময়ই অফিসের নকল, তল্লাশি ও রেজিস্ট্রেশন ফিসহ চালানের টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে পাঠানো হত তাকে।
সম্প্রতি সাবরেজিস্ট্রি অফিসের (নিরীক্ষণ) অডিট চলার সময় কোটি টাকার ঘাপলা বেরিয়ে আসার পর আলোচনায় আসে পিয়ন (অফিস সহায়ক) ইয়াছিন মিয়ার নাম। গত ২৭ নভেম্বর সরকারি বিভিন্ন ফির চালান ঠিক আছে কি না সেটি যাচাই শুরু হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাবরেজিস্ট্রারকে ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন অডিট কর্মকর্তা মিথেন্দ্রনাথ শিকদার। পরদিন ইয়াছিনকে সঙ্গে নিয়ে সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান সোনালী ব্যাংকে যান। সেখানে গিয়ে কয়েকটি চালান মিলিয়ে দেখেন টাকা জমা হয়নি।
তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, হয়তো সিল-স্বাক্ষর জাল করে এসব টাকা জমা দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অডিট অফিসারকে জানানো হয়। এরই মধ্যে ইয়াছিন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর সদর থানায় জিডি করা হয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পশ্চিম পাইকপাড়ার লজেন্স ফ্যাক্টরি এলাকায় পাশাপাশি দুটি ছয়তলা ভবনের মালিক ইয়াছিন মিয়া। এর একটি তাঁর ভায়রা সুমন মিয়ার সঙ্গে যৌথ মালিকানায় করেছেন। নিজের মালিকানার অন্য বাড়িতে দ্বিতীয় তলার পুরোটায় দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। ফুলবাড়িয়া এলাকায় তৃষা লজের ছয়তলার দক্ষিণ-পশ্চিমের ফ্ল্যাটটি সম্প্রতি কিনেছেন ইয়াছিন। এখানে তিনি তৃতীয় স্ত্রী মুকসুরাকে নিয়ে থাকতেন।
পারিবারিক সূত্র ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে ইয়াছিন মিয়া সাজেদা বেগমকে বিয়ে করেন। পৌর এলাকার ভাদুঘরে ৪ শতাংশ জায়গার ওপর তিনতলা বাড়ি করে সেখানেই বসবাস শুরু করেন তিনি। বছর দশেক পর আকলিমা নামের এক বিধবাকে বিয়ে করেন ইয়াছিন। এর বছর পাঁচেক পর ভাদুঘর এলাকার প্রবাসী কামাল মিয়ার স্ত্রী মুকসুরার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকেও বিয়ে করেন ইয়াছিন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা