অনলাইন ডেস্ক
তাহলে কি টস জিতে মুমিনুল হকের বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া শাপে বর হয়ে উঠল? ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে কি প্রথম দিনই বাজে অভিজ্ঞতা হবে অধিনায়কের? নাহ! তেমন কিছু হয়নি। পথ দেখালেন সেই বোলাররাই।
পরের দুই সেশনে লড়াই করলেন পেস ত্রয়ী। স্পিনে মিরাজ দুর্দান্ত। দিন যত গড়িয়েছে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। নিজেদের দারুণভাবে ফিরে পেয়ে ডারবান টেস্টের প্রথম দিন নাগালের বাইরে যেতে দেননি বোলাররা। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২৩৩। প্রথম দিনের লড়াইটা ফিফটি-ফিফটিতেই থাকল।
মাঠে নামার আগেই বড়শর ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল সকাল থেকে পেটে পীড়ায় ভুগছেন। সঙ্গে শরিফুল ইসলামের রয়েছে ছোটখাটো চোট। দুজনকে ছাড়াই দল সাজাতে বাধ্য হন মুমিনুল। মাঠে নেমে আরেক বিপত্তি। বাংলাদেশ সময় ২টায় ম্যাচ শুরুর কথা থাকলেও সাইটস্ক্রিনে সমস্যা থাকায় ৩০ মিনিট পর প্রথম বল মাঠে গড়ায়।
উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া ছিল। কিন্তু বাউন্স কতটা, মুভমেন্ট ছিল কিনা কিংবা পেস সহায়তা আছে কিনা, সেটা বোঝার মতো বোলিংই করেনি তিন পেসার তাসকিন, ইবাদত ও খালেদ। শুরুর দিকে লাইন ও লেন্থ হারিয়ে বারবার লেগ স্টাম্পে বোলিং করেছেন। আলগা বোলিংয়ে রান দিয়েছেন খোলামনে। ডট বল করেও চাপ তৈরি করতে পারেননি। ২৫ ওভারের খেলায় মেডেন ছিল মাত্র ২টি।
দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এলগার ও এরউইয়া নতুন বলে কোনো চ্যালেঞ্জই পাননি। থিতু হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সঙ্গে রানও তুলেছেন অনায়েসে। ২৫ ওভারে প্রোটিয়াদের রান ৯৫। তবে শেষ ওভারে লিটন এরউইয়ার ক্যাচ না ছাড়লে মিরাজ ব্রেক থ্রু দিতে পারতেন সকালের সেশনেই।
দ্বিতীয় সেশনে ফিরে পাল্টে যান বোলাররা। এবার চেপে ধরে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে। সাফল্য পেতে সময় লাগেনি। শেষ মুহূর্তে দলে ঢোকা খালেদ আহমেদের আচমকা লাফিয়ে ওঠা বলে গ্লাভস ছুঁইয়ে পেছনে ক্যাচ দেন এলগার। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে দুই হাতে বল গ্লাভসবন্দি করেন লিটন। ১১৩ রানে বাংলাদেশ পায় প্রথম উইকেট। এলগার ফেরেন ৬৭ রানে। পরের ওভারে আরেক থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান এরউইয়াকে ফেরান মিরাজ। অফস্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটে টেনে আনেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
বোলিংয়ে উইকেট নেওয়ার পর ফিল্ডিংয়ে মিরাজ যেন হয়ে উঠেন ‘জন্টি রোডস’। পয়েন্টে ফিল্ডিংয়ের সময় বাভুমার ব্যাট থেকে আসা বল ডাইভ দিয়ে থামান। এরপর চোখের পলকে উঠে, বসে থাকা অবস্থায় থ্রো করেন স্ট্রাইক প্রান্তে। বল যখন স্টাম্পে আঘাত করে তখনও ক্রিজের বাইরে পিটারসেন। কোনাকুনি থেকে মাত্র একটি স্টাম্প দেখে থ্রো করতে হয়। মিরাজের ক্ষীপ্রতা ও দুর্দান্ত থ্রো বাংলাদেশকে তৃতীয় উইকেটের সাফল্যে ভাসায়।
অবশ্য পিটারসেনকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তাসকিন বোলিংয়ে এসে ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। পেছন থেকে উইকেটের আবেদন করেন লিটন। তাসকিনের আবেদন করেন একটু দেরিতে। গোটা দলের আবেদনে ছিল না আত্মবিশ্বাস। আম্পায়ারও সেই আবেদনে দেননি সাড়া।
দ্বিতীয় সেশনে প্রোটিয়ারা ২৮ ওভারে ৭০ রান তুলে হারায় ৩ উইকেট। বাংলাদেশ দারুণভাবে ফিরে এলে কিছুটা চাপে পরে স্বাগতিকরাও। সেই চাপে তৃতীয় সেশনের শুরুতেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় আরেকটি উইকেট। পেসার ইবাদতের শর্ট বল পুল করতে যান অভিষিক্ত রিকলটন। একটু বাড়তি বাউন্স পাওয়ায় টাইমিং হয়নি ঠিকঠাক। মিড অনে মুমিনুল সহজেই বল তালুবন্দি করেন।
৪ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ দিনের খেলায় ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। শেষ বিকেলে আরো ধারালো হয়ে উঠে আক্রমণ। ৮০ ওভারের পর নতুন বল নিয়ে স্বাগতিকদের চেপে ধরার পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু শেষ বিকেলে আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ৭৬.৫ ওভারে শেষ প্রথম দিনের লড়াই।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ১৮তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন তেম্বা বাভুমা। ১১৯ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন কাইল ভেরান্নে। ২৭ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। দুজনের জুটির রান ৫৩।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা