অনলাইন ডেস্ক
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম হলেও আম রফতানি শীর্ষ দশে নেই দেশটির নাম। বাংলাদেশের আমের চাহিদা আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সরকারের নেওয়া এই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়ন, আমভিত্তিক রফতানিমখী কৃষি শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং গ্রামীণ মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানান তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয় এবং উৎপাদিত আমের পরিমাণ ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫০ টন। বাংলাদেশ ২০২১ সালে প্রায় ২৩০০ মেট্টিক টন আম রফতানি করেছে (প্লান্ট কোরাইন্টাইন উইং, ডিএই), যা পূববর্তী বছরের প্রায় ৫ গুণ। জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮, অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় কৃষি বাণিজ্যিকরণ, রফতানি নীতি ২০১৮-২১ এ বাংলাদেশ উত্তম কৃষি চৰ্চা নীতি– ২০২০ এ মানসম্মত ফসল উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কৃষি সম্প্রসারণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, দেশের সবগুলো জেলাতেই কম-বেশি আম উৎপাদন হয়। দেশে ৭২ প্রজাতির আম উৎপাদন হলেও সবগুলো আম রফতানিযোগ্য নয়। আর হাতে গোনা অল্প কিছু আম রয়েছে যা স্বাদে গুণে অনন্য হওয়ায় (খিরসাভোগ, গোপাল ভোগ, হাড়িভাঙ্গা, আম্রপলি এবং বারি-৪) বিদেশে চাহিদা রয়েছে। একারণে রফতানিযোগ্য আমের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। যা চলতি বছরের ১৯ জুন সরকারের অনুমোদন পেয়েছে। এটি ২০২৭ সালের জুলাইয়ে শেষ হবে। এসময়ের মধ্যে আমরা উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মধ্যমে মানসম্মত আমের বর্তমান অবস্থা হতে ৫ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা, রফতানিযোগ্য মানসম্মত আম উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকের আয় বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, উন্নত মানস্মত আম উৎপাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ে কৃষক, কর্মকর্তা ও সুবিধাভোগি (স্টেকহোল্ডার) জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কৃষিকর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।
চলতি বছরের কার্যক্রম প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে ৪০০ বাগানে। প্রকল্পকালীন সময়ে প্রকল্প এলাকায় ২৩০০টি বাগান প্রদর্শনী প্লটে রূপান্তর করা হবে। রফতানিযোগ্য জাতের আম বাগান করা হয়েছে ৩০০টি। প্রকল্প মেয়াদে করা হবে ২৩০০টি বাগান। বিদ্যমান আম বাগানে সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে ১৫০টিতে। প্রকল্পকালে ১৮৪০টি বাগানে করা হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার (প্রুনিং, ব্যাগিং, ও বালাই ব্যবস্থাপনা) মানস্মত আম উৎপাদন করা হবে ১৪০টি বাগানে। মেয়াদকালীন সময়ের মধ্যে ১৮৪০টি বাগানের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক, রতানিকারক, বাজারজাতকারী, পরিবহন শ্রমিক, কার্গো ব্যবস্থাপনায় জড়িত সবাইকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও রফতানিযোগ্য আম পরিবহন জনিত কারণে ২৫-৩০ শতাংশ আম নষ্ট হয়। এ ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। আমরা কৃষক থেকে শুরু করে রফতানি পর্যন্ত আম ব্যাস্থাপনাকে একটি ছাতার নিচে আনার কাজ করছি। যাতে করে রফতানিকারকরা একই জায়গা থেকে প্রায় সকল সুবিধা পান। রফতানির অতিরিক্ত আম যাতে নষ্ট না হয় বা কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য আমরা বড় চেইন শপগুলোর সঙ্গেও কাজ করছি। যাতে করে আমগুলো সরাসরি এসব দোকানে বিক্রির সুযোগ পান।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, রফতানিমুখী বাজারে আমের সংযোগ স্থাপন এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। প্রকল্পের আওতায় পাঁচ শতাংশ আমের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা হবে। তিনি আশা করেন চলতি বছর আম রফতানির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, দেশের চারটি বিভাগের ১৫টি (রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুর) জেলার ৪৬ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা