তাসকিনা ইয়াসমিন : এখন যে অবস্থা দেখছি এতে মনে হচ্ছে, ভাবখানা এমন – আপনি ঘরে থাকেন। বাকিরা সবাই বাইরে থাকবে। করোনা প্রতিরােধ এইভাবেই হবে।
যা অবস্থা চলছে। চারদিকে যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে বিপর্যয় সামনে অপেক্ষা করছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে আমি ঘরে থাকছি । বাকিরা সবাই বাইরে থাকছে। এইভাবে কিভাবে করোনা ভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাসের সঙ্গে আমরা মোকাবেলা করব।
ঠিক যেভাবে রোজ ভােরে ঘুম থেকে উঠেই বাজারে ছুটত বাড়ির গৃহিনী সেভাবেই ছুটছে। একদিনও বাজার বাদ যায়না। আগে যেমন বাড়িতে মেহমান আসত তেমনই আসছে। নিজেরাও ঠিক যেভাবে নিজেরা দল বেঁধে বেড়াতে যেত সেই বেড়ানো চলছেই।
মেহমান আসা যাওয়া লেগেই আছে। আবার বাড়ির কর্তার তো এখন প্রতিষ্ঠান ছুটি। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। তার এখন অফুরন্ত অবসর। তিনি নিয়ম করে গুনে গুনে পাঁচবার মসজিদে যাচ্ছেন, নামাজ পড়ছেন ফিরে আসছেন। যুক্তি দেখাচ্ছেন – মুসলমানদের সঙ্গে আল্লাহ আছে। অবশ্যই আমি নিজেও বিশ্বাস করি মুসলমানদের সঙ্গে সবসময় আল্লাহ আছেন।
আজ দুপুরে দুধওয়ালা ভাইয়ের হাঁকডাক।
ভাই আপনি!
হ্যা কি করব কন! এক মহিলা ফোন দিয়ে বলল, ভাই দুধ না দিলে খাব কি? তাই দুধ দিতে আসলাম!
এলেন কিভাবে? ক্যান আমাগো রাস্তায় তো গাড়ি চলছে। সব খোলা আছে। কিচ্ছু বন্ধ নাই।
সরকার প্রথমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে। পরে সেটা বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত করেছে।
এদিকে হাসপাতালে যারা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে তাদের সবার কাছে নিরাপত্তা পোশাক পৌঁছেনি। ফলাফল, দুজন চিকিৎসক একজন নার্স আক্রান্ত।
যারা রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করবে তারই নিরাপত্তা দিতে পারেননা! তাহলে রোগী সুস্থ হওয়ার আশা কি করে মিলে!
চীনের মতো আর্থিকভাবে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রতে ডিসেম্বরে করোনা ধরা পড়েছে। সেই করোনা মার্চের শেষের দিকে এসে শেষ হলো। তারা কত বেশি মাত্রায় প্রকেকটিভ ছিল আমরা গণমাধ্যমে তা দেখেছি। তারপরে তাদের চার মাস লেগেছে। আর আমরা আর্থিকভাবে দূর্বল। আমাদের স্বাস্থ্যখাতের বাজেট মাত্র ২ শতাংশ। আর সেই আমরা এই রোগ মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানো এই ভাইরাস প্রতিরোধ আমরা দৃঢ়ভাবে মানুষকে আলাদা করতে পারছিনা। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৯ দিন বা মতান্তরে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত যদি আমরা সবাই ঘরে থাকতাম তাহলে ১০ এপ্রিল বা ১৫ এপ্রিলে গিয়ে দেখা যেত আর কোন নতুন রোগী পাচ্ছিনা আমরা। ভাইরাস বাতাসে ভেসে ভেসে ক্ষয়ে যাচ্ছে। বাহক না পেয়ে মৃত্যুবরণ করছে। কিন্তু এখন যা ঘটছে আমাদের ৯এপ্রিলের পরে বাহক অনেক থেকে যাবে। এর ফল আমাদের ভোগ করতে হবে।
এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লকডাউন চলছে। সেই সঙ্গে আমরা চালালে আমরা তাদের সঙ্গেই জেগে উঠলে আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থাকত। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়াচ্ছে অন্যদেশ যখন জেগে উঠবে আমরা তখন ঘুমাতে যাব। এই অবস্থায় আমরা আরও বিপদে পড়ব। আল্লাহ না করুক করোনা ভাইরাস যদি মহামারি আকারে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এর জন্য কত মাশুল আমাদের দিতে হবে।
তাই সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ সবকিছু্ই বন্ধ করুন। রক্ষা করুন এই দেশের জনগণকে।
# তাসকিনা ইয়াসমিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, লাল সবুজের কথা ডটকম।
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা