অনলাইন ডেস্ক
মা’ অপূর্ব এক মিষ্টি মধুর শব্দ। এ শব্দের মধ্যে পৃথিবীর সব মায়া মমতা অকৃত্রিম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। মা, যার ঋণ জন্ম-জন্মান্তরেও শোধ করা যায় না। গোটা নারী জাতিই মাতৃত্বের প্রাণঘাতী অহঙ্কার ধারণ করেই সৃষ্টির পর থেকে সৃষ্টির শেষ অবধি কায়েম থাকবে। পৃথিবীতে অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় মানব জাতির জন্মদান প্রক্রিয়া অনেক বিপজ্জনক। সন্তান জন্মদানের আগে মাকে বিশাল বেদনাদায়ক সময় অতিক্রম করতে হয়। প্রসব বেদনার পর সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়। তবু মা মেনে নেন। একের পর এক সন্তান জন্ম দিয়ে যান, হাসিমুখে আদরে আদরে সন্তানকে বুকে টেনে নেন। এর আগে ১০ মাস ১০ দিন পেটে নিয়ে মায়ের কঠোর দিন কাটে। তারপর মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে সন্তানকে জন্ম দিয়ে ভুলে যান সব কষ্ট। পরম মমতায় সন্তানকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করেন। শত কষ্টে আগলে রাখা সন্তানদের কাছে একদিন মা বোঝা হয়ে যান। ইট কংক্রিটের সংসারে আমাদের কানে পৌঁছায় না বৃদ্ধ মায়ের কান্না। তারপরও অভিযোগ নেই মায়ের, ভাগ্যকে দোষারোপ করে যায় শুধু, ক্ষমা করে দেয় সন্তানকে। ‘তাই কবি বলেছেন-
সর্বহারা, সর্বহারা জননী আমার
তুমি কোনদিন কারও করনি বিচার, কারও দাওনি দোষ,
ব্যথা বারিধির কূলে বসে কাঁদো
মৌন কন্যা ধরণীর।
মা, শাশ্বত চিরন্তন একটি আশ্রয়ের নাম। এসব বর্ণনা আমরা প্রতিটি মানব সন্তানই জানি। তারপরও নির্দয়ভাবে মাকে নিয়ে ভাগ্যের পরিহাস করি অকৃতজ্ঞ সন্তানেরা। তাই হয়তো ওই অকৃতজ্ঞদের সচেতন করতেই ‘মা দিবসের’ উদ্ভব হয়।
সংক্ষেপে মা দিবস সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক। বিভিন্ন ধর্মে মা নিয়ে প্রথম ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। ইসলাম ধর্মে মাকে অনেক উঁচুতে স্থান দিয়েছে। বলা হয়েছে- আল জান্নাতু তাহতা আকদামেল উম্মেহাত অর্থাৎ মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেস্ত। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে আনা জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জার্ভিসের উদ্যোগে মা দিবসের সূচনা হয়। আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন।
সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় মা দিবস। ১৯১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
যদিও করোনার কারণে গত বছরের মতো এবারও দিবসটিতে কোনো আনুষ্ঠানিকতা দেখা যাবে না। তাই বলে ঘরে ঘরে মায়ের ভালোবাসা কুড়াতে কার্পণ্য করবে না সুসন্তান।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা