ভ্লাদিমির পুতিন কে?
গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর বয়স ৬৭। রাশিয়ায় অনেক তরুণ ভোটার আছেন, যারা তাদের জীবনে ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়া আর কাউকে দেশটির নেতা হিসেবে দেখেননি। পুতিনের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।
পুতিন কী করেছেন?
পুতিন কী করেননি? তিনি দেশের বাইরে যুদ্ধ চালিয়েছেন, দেশের ভেতরে পেনশন ব্যবস্থার সংস্কার করেছেন। প্রতিবেশী ইউক্রেনের একটি অংশ দখল করে নিয়ে তিনি রাশিয়ার সীমানা বাড়িয়েছেন। রাশিয়ার সবচেয়ে বেশি বিক্রির ক্যালেণ্ডারে শোভা পেয়েছে তার ছবি। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি তিনি দেশটির সংবিধানে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন যাতে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা যায়। তারপর এক নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন।
কেন?
কাগজে কলমে পুতিন দাবি করছেন এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। তিনি সরকারের হাতে আরও ক্ষমতা দিতে চান। যেমন মন্ত্রী নিয়োগ বা এধরণের ক্ষমতা। অন্যদিকে তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করতে চান।
কিন্তু বাস্তবে আসলে পুতিন এখন চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসীন। রাশিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুসারে তিনি আর নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। কারণ সংবিধান অনুযায়ী পর পর দুবারই কেবল ক্ষমতায় থাকা যায়।
কিন্তু পুতিন টানা দুবার প্রেসিডেন্ট থেকে এরপর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে গিয়ে আবার টানা দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের পদে আছেন। এরপরও পুতিন যে রাশিয়ার ক্ষমতার মঞ্চ থেকে সরে যাবেন তা মনে হচ্ছে না। রাশিয়ার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পরবর্তী পরিকল্পনার ছক কাটছেন।
কীভাবে তিনি সেটা করবেন?
বিশ্বের অনেক দেশের নেতাই নির্লজ্জভাবে তাদের ক্ষমতার মেয়াদ নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। এজন্যে হয় তারা সংবিধানের এক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাতিল করে দিয়েছেন অথবা কোন সাংবিধানিক ফাঁক-ফোকরের সুযোগ নিয়েছেন। পুতিন ইতোমধ্যে এই কাজ একবার করেছেন। এবার মনে হচ্ছে পুতিন নতুন কোন কৌশল আঁটছেন।
রাশিয়ায় ‘স্টেট কাউন্সিল’ নামে একটি পরিষদ আছে, যার প্রধান তিনি নিজে। এখন পর্যন্ত এর ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য খুবই সীমিত। কিন্তু এখন এই ‘স্টেট কাউন্সিল’কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্র ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার এরকম কৌশলের নজির আছে। কাযাখাস্তানের নুরসুলতান নাযারবায়েভ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অবসর নিয়ে আজীবনের জন্য ‘লিডার অব দ্য নেশন’ বা ‘জাতির নেতা’র পদে অধিষ্ঠিত হন।
এই রোমাঞ্চকর রাজনৈতিক নাটকের পরবর্তী পর্বটি তাহলে কখন?
ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারবেন। কিন্তু তার পর কে আসলে দায়িত্ব নেবেন, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা আছে।
পুতিন তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, সেই মিখাইল মিশুস্টিনকে অনেকে হিসেবের বাইরে রাখছেন। রাশিয়ায় একটা কথা চালু আছে। সেখানে নাকি রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষপদটি টেকোমাথা আর কেশাবৃত মানুষের মধ্যে আবর্তিত হয়, অর্থাৎ একবার কোন টেকোমাথা ক্ষমতায় তো পরের বার কোন কেশাবৃত নেতার পালা।
শুনতে যতই খারাপ লাগুক, রাশিয়ার বর্তমানে প্রেসিডেন্ট পুতিনের মাথায় কিন্তু টাক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিনও টেকো, কাজেই তিনি পুতিনের উত্তরসুরী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে। বিবিসি।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা