দিল মনোয়ারা মনুর সবচেয়ে বড় গুণ ছিলো মানবিকতা। অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন তাঁর লেখায় থাকতো। বুধবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক দিল মনোয়ারা মনু’র প্রয়াণে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ সভায় একথা বলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে মনু’র প্রয়াণে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সংগঠনের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে। সভার শুরুতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয় এবং দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বক্তব্য রাখছেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের উজ্জল নক্ষত্র এবং সংগঠনের প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক দির মনোয়ারা মনুর প্রয়াণে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে টেলিফোনে হঠাৎ মৃত্যুর খবর আমাদের সকলকে হতবিহ্বল করে দেয়। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি বেগম পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। অগ্রজ সাংবাদিকদের সাথে তাঁর ছিল নাড়ীর টান। এই গুনী মানুষটি মহিলা পরিষদের গত দ্বাদশ সম্মেলনে সংগঠনের প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন পেশাগত জীবনে তিনি মধ্যগগণে বিরাজ করছেন। তিনি বলেন, সংগঠনে থাকা অবস্থায় সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, পাশাপাশি সংগঠনের কাজ কে নিয়মিত গণমাধ্যমে তুলে ধরতে তিনি সবসময় নেপথ্যে থাকতেন। আজ যখন বিভিন্ন পেশজীবি নারীরা তাদের সৃজনশীলতা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তখন তাঁর চলে যাওয়া আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
আরও পড়ুন : দিল মনোয়ারা মনুর মৃত্যুতে দেশ একজন নিবেদিত প্রাণ সাংবাদিককে হারালো : মহিলা পরিষদ
সভায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ বলেন, ব্যক্তিগত কর্মময় জীবনে তিনি এক অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একজন নিষ্ঠাবান, দায়বদ্ধ, সৎমানুষ, সৎকর্মী হিসেবে তিনি নিজেকে তুলে ধরেছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন তিনি একজন শুভ চিন্তার নিভৃতচারী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর স্নিগ্ধ আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব কতটা শক্তিশালী ছিল এটি তাঁর প্রয়াণের পরে স্পষ্ট হয়েছে। সকলকে শ্রদ্ধা করা, তাদের ভালো কাজে উৎসাহ দেয়া এটি ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর অনন্যা পত্রিকায় দায়িত্ব পালন করেন। এত দীর্ঘ সময় কোন নারী সাংবাদিক সম্পাদকের পদে দায়িত্ব পালন করেনি। সংগঠনকে থাকা অবস্থায় নারী সাংবাদিকদের নারী আন্দোলনের সাথে যুক্ত করতে সবসময়ই চেষ্টা করে গেছেন। তিনি উপস্থিত সকলকে দিল মনোয়ারা মনুর আদর্শকে স্মরণ করে চলার আহ্বান জানান।
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, দিল মনোয়ারা মনু একজন অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনা মানুষ ছিলেন। তিনি নারী সাংবাদিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এটির সাথে যুক্ত ছিলেন। তাঁর একটা বড় গুণ ছিল কেউ ভালো লিখতে পারলে সেটির জন্য তাকে উৎসাহ দিতেন। অনন্যা পত্রিকাকে অনন্য হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।
সংগঠনের সদস্য হুমায়রা খাতুন বলেন, দিল মনোয়ারা মনু আপার হাত ধরে বেগম পত্রিকায় যুক্ত হই। সেখান থেকে আরো এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতেন তিনি। তিনি আমার পথ প্রদর্শক। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
দিল মনোয়ারা মনুর জীবনী পাঠ করছেন মাহফুজা জেসমিন
দিল মনোয়ারা মনুর জীবনী পাঠ করেন সংগঠনের গণমাধ্যম উপপরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধি মাহফুজা জেসমিন।
সংগঠনের গণমাধ্যম উপপরিষদের সদস্য তাসকিনা ইয়াসমিন বলেন , দিল মনোয়ারা মনু একজন বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমার কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষকে চিনতে সাহায্য করেছেন। তিনি চলে যাওয়ার পর অনুভব করি এই সময়ের তিনি কতটা কিংবদন্তীতুল্য মানুষ ছিলেন । তিনি নারীর অধিকারের প্রতি, শিশু অধিকারের প্রতি সবসময় সচেষ্ট ছিলেন।
বক্তব্য রাখছেন প্রয়াত দিল মনোয়ারা মনুর জীবনসঙ্গী শামসুল হুদা
স্মরণ সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উপদেষ্টা সেলিনা খালেক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলোচক সারাবান তহুরা, লিগ্যাল অ্যাডভোকেসী এন্ড লবীর পরিচালক মাখছুদা আখতার লাইলী, প্রয়াত দিল মনোয়ারা মনুর জীবনসঙ্গী শামসুল হুদা।
এসময় দিল মনোয়ারা মনুকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন প্রচার ও গণমাধ্যম উপ-পরিষদ সদস্য নাসরিন শওকত । সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তাসহ মোট ৪২ জন উপস্থিত ছিলেন।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা