খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, প্রভিশন সংরক্ষণ এবং ঋণের চাহিদার তুলনায় আশানুরূপ আমানত না আসায় অর্থবাজারে টানটান অবস্থায় তারল্য। বাজারে তারল্যের এই সংকট পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার কিনতে পারছে না। ফলে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই।
অর্থবাজারের সঙ্গে পুঁজিবাজার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের মূলধন নিয়ে বিনিয়োগ করে। কিন্তু অর্থবাজারে তারল্য সংকট থাকলে পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তারল্য প্রবাহ কমে যায়।
মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ডিলার ও ব্রোকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অর্থবাজারের তারল্য সংকটে প্রভাবিত হচ্ছে পুঁজিবাজার। অনেকের হাতে বিনিয়োগের মতো টাকা নেই। বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় শেয়ারের দাম কমে গেছে। লোকসানের কারণে কারো কারো মূলধনও আটকে গেছে। এ অবস্থায় তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সহায়তা প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বাজেটে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের অনেক দাবিও পূরণ হয়েছে। কিন্তু কতিপয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অব্যাহতভাবে শেয়ার বিক্রি করছে। শেয়ার বিক্রি করার মতো দৃশ্যমান কোনো কারণ না থাকলেও ১০টির বেশি বড় ব্রোকার ও ডিলার শেয়ার বিক্রি করেছে। পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বেশি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকরা নিষ্ক্রীয় হলে বাজারে পতন ঘটে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। সেই আতঙ্ক থেকেই পুঁজিবাজারে পতন হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার প্রবণতায় প্রতিবছর বাড়ছে খেলাপি। আর খেলাপি বাড়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। কিন্তু তুলনামূলক আমানত না আসায় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে তারল্য সংকটে পড়েছে ব্যাংক। ঋণের চাহিদা থাকলেও দিতে পারছে না অনেক ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগে এক্সপোজার সীমায় বড় ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সিদ্ধান্তে, অতালিকাভুক্ত বন্ড, ইক্যুইটি শেয়ার, প্রেফারেন্স শেয়ার, ডিবেঞ্চার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যাতে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের পথ সুগম হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট থাকায় সে অর্থ পুঁজিবাজারে আসেনি।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের স্টক ব্রোকার, ডিলারদের একটি অংশ অব্যাহতভাবে কোনো কারণ ছাড়া শেয়ার বিক্রি করছেন বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের এই পতনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। কয়েক দিন ধরে ১০টির বেশি বড় ব্রোকার ও ডিলার শেয়ার বিক্রি করছেন। কেন শেয়ার বিক্রি করছেন, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বড়দের শেয়ার বিক্রিতে ছোট বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’
এমটিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সিইও খায়রুল বাশার আবু তাহের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার ও ডিলারদের অনেকের হাতে টাকা নেই। ব্যাংক খাত তারল্যের টানাটানির মধ্যে রয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। অর্থবাজারের সঙ্গে পুঁজিবাজারের যোগসূত্র থাকায় আর্থিক বাজার খারাপ অবস্থায় থাকলে পুঁজিবাজারেরও উন্নতি হয় না।’
NB:This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা