অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা জোবায়দা কামেলা বেগম মারা গেছেন। তিনি রবিবার (৩ নভেম্বর) ঢাকায় ধানমন্ডির বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। তার বোনের ছেলে আলী আশরাফ খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জোবায়দা কামেলা বেগমের জন্ম ১৯৩০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শহরতলির ফুলবাড়ি নামক গ্রামে সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।
পিতা মরহুম অধ্যক্ষ শাইখ শরফুদ্দীন ও মাতা মরহুমা হালীমা বেগমের ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক ও সাবেক সচিব মরহুম ড. আবদুল্লাহ্ আল্-মুতী শরফুদ্দীন ছিলেন তাঁর অগ্রজ। তিনি দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৯৫০ সালে কাজী মহিউদ্দিন এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। মরহুম কাজী মহিউদ্দিন ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (অর্থ)। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে হাইকোর্টে ওকালতি করতেন এবং ১৯৯৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বিয়ের পরও তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যান এবং পরবর্তী সময়ে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে চাকরি করে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সংগৃহিনী এবং ভালো রন্ধন শিল্পী। হস্ত ও কারুশিল্পের বিভিন্ন কাজ তিনি অতি দক্ষতা ও নিপুণ হাতে সম্পন্ন করতেন। বিশেষ করে সূচি শিল্পে তাঁর দক্ষতা ছিল অসাধারণ। এছাড়াও তিনি ছিলেন একজন লেখিকা।
২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ” জীবন নদীর বাঁকে”।উক্ত গ্রন্থটিতে তিনি শিশুকাল থেকে ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর দেখা দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি ছিলেন সহজ-সরল, গৃহকর্মে সুনিপুণা একজন সাহসী নারী, আদর্শ শিক্ষয়িত্রী, ধর্ম পরায়ন ও কুসংস্কারমুক্ত সমাজ সচেতন সাদা মনের মানুষ। তিনি সংসারের সব কাজ নিজের হাতে করতে পছন্দ করতেন।
মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে, দুই ছেলে, আট জন নাতি-নাতনি, তিন ভাই, তিন বোনসহ পরিবার-পরিজন, অনেক আত্মীয়স্বজন, বহু গুণগ্রাহী, শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন। রবিবার বাদ এশা জানাযা শেষে বনানী কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা