ভারতে অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে গঙ্গার পানি বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ বন্যার কবলে পড়েছে বাংলাদেশের সাতটি জেলা। নতুন করে আরও তিনটি জেলা আজ শুক্রবারের মধ্যে বন্যাকবলিত হতে পারে। এর কারণ, গঙ্গার পানি পদ্মা হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হচ্ছে। যে সাত জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে, তার সবই পদ্মা অববাহিকায়। এর সঙ্গে গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের হওয়া অস্বাভাবিক বৃষ্টিও এই বন্যার জন্য কিছুটা দায়ী।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রায় প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে কম বেশি বন্যা হয়। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি। অর্থাৎ শরৎকাল চলছে। এ সময়ে সচরাচর বন্যা হয় না। এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা অকাল বন্যা।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস বলছেন, বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। গঙ্গা ও পদ্মা অববাহিকার পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। এরই মধ্যে ওই দুটি অববাহিকার পাঁচটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে গেছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৯৩টি পয়েন্টের মধ্যে ৩৮টি পয়েন্টেই পানি বাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলতি ইংরেজি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবারও পদ্মায় পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে রাজশাহী, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। বসতবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে উঁচুস্থানে ঠাঁই নিয়েছেন।
বন্যাকবলিত এলাকায় শীতকালীন আগাম সবজি ও আমনের ফসল ডুবে গেছে। কয়েক লাখ মানুষ ইতিমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে ও সড়কে আশ্রয় নিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, কারওয়ান বাজার এলাকায় কিছু সময়ের জন্য জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সকাল ছয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত রাজধানীতে মোট ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় গতকাল সিলেটে ২৭ মিলিমিটার।