অনলাইন ডেস্ক
সহসা লকডাউন উঠে পুরোদমে উৎপাদনে যেতে না পারলে বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তিন লাখ মানুষকে।
তাই আপাতত সমাধান হিসাবে ঋণের সুদ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলে প্রযোজ্য জরিমানা মওকুফের পাশাপাশি স্বল্প সুদে ঋণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) সহ-সভাপতি মো. জহির এইচ চৌধুরী।
যদিও এরই মধ্যে সম্ভাব্য লোকসান ও জিডিপিতে স্টিল শিল্পের অবদানের ভিত্তিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্যাকেজ থেকে স্টিল শিল্পকে স্বল্পসুদে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার অনুরোধ করেছে বিএসএমএ।
জহির এইচ চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এই খাতে ক্ষতির পরিমাণ রোজ রোজ বাড়ছে। আর ক্ষতির পরিমাণ কত হবে, আগে থেকেও সঠিক অনুমান সম্ভব নয়। কারণ এটা নির্ভর করে বন্ধ বা লকডাউন কতদিন থাকে। আবার কতদিন পর কারখানা চালু হয় এসব পরিসংখ্যান বিবেচনা করে বিষয়টি আগেই হিসাব করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কিছু খরচ যা সব সময়ই দিতে হয়। যেমন, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, ঋণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সুদ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল ইত্যাদি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অনেক বিল আসে আমাদের সেক্টরে। যা না দিলে জরিমানা যোগ হয়ে যায়। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি আসলেই সঙ্কটাপন্ন। এ সকল খরচ যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে মাসে ৭০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। এটা কতদিন চলবে সেটা একটি বিষয়, আর একটি বিষয় হচ্ছে ব্যবসা কবে শুরু হয় ও এই সেক্টর পুরোদমে কবে চালু হয়। এসব হিসাব বিবেচনা করলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের স্টিল স্ক্র্যাপ সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও সম্মিলিত ইউরোপে অনেক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। কন্টেইনারের অভাবে শিপমেন্ট হচ্ছে না, ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টে জাহাজের অভাবে কন্টেইনারের স্তুপ জমাট বাঁধছে। শুধু চীনে আটকে আছে ৮০ লাখের বেশি খালি কন্টেইনার। বিশ্ববাজারে আগামী বছর পর্যন্ত স্টিল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল সরবরাহে সংকট থাকবে। বাংলাদেশে বর্তমানে এ খাত সংশ্লিষ্ট অন্তত সাড়ে তিনশত কারখানা রয়েছে। এ সেক্টরকে স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে কমপক্ষে দেড় বছর সময় লাগবে। আর আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে লাগবে ৫ থেকে ৬ বছর। যে কারণে সম্ভাব্য লোকসান রোধে স্টিল শিল্পকে স্বল্পসুদে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রয়োজন। এর পাশাপাশি প্রত্যেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও শ্রমিকদের ৪ মাসের বেতন-ভাতা ঋণ আকারে অন্তত ১২টি কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, আগামী এক বছরের জন্য সব ধরনের অতিরিক্ত সুদ বা পেনাল্টি চার্জ মুক্ত রাখা ও ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ হার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। লোকসানের চাপ কমাতে ১০ বছরের জন্য ১২ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ সব দীর্ঘমেয়াদি ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় বাড়াতে হবে।
অন্যদিকে সংগঠনটি চাচ্ছে ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল পরিশোধের সময়সীমা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো ও ৫ কিস্তিতে জরিমানা ছাড়া পরিশোধের সুযোগ দেওয়া। এর পাশাপাশি আগাম কর ও বন্দর চার্জের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা রাখার দাবি সংগঠনের।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা