নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর মেজর, ধনী ব্যবসায়ী বা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতারনা করে অর্থ অত্মসাৎকারী এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম, এসএম বদরুল আলম (৪৫)। রাজধানীর কাকরাইল মোড় এলাকা হতে ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার সকাল ০৮.০০ টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
ডিবি সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অর্গানাইজ্ড ক্রাইম প্রিভেনশন টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক জানান, প্রতারক বদরুল প্রথমে টার্গেট ঠিক করার পর বিভিন্ন কৌশলে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। তার সাবলিল কথাবার্তা, নম্রভদ্র আচরণ ও দামী পোশাক আশাকের মাধ্যমে কখনো নিজেকে ধনী ব্যবসায়ী, কখনো স্বনামধন্য পত্রিকার সাংবাদিক, কখনো সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে টার্গেট ব্যাক্তির নিকট বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তি সময়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি আরো জানান, বদরুল আসলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পুরানো ঢাকার বাবুবাজারে সেবা মেডিক্যাল হল নামে তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। এছাড়া কথিত একটি পত্রিকার সাংবাদিক কার্ড তৈরি করেছিলেন তিনি। তার এক মামী রয়েছেন, যিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। আরেক মামা ধানমন্ডির র্যাংগস আনাম প্লাজায় একাধিক দোকানের মালিক। নিজের সম্পর্কে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আর আত্মীয়-স্বজনের গল্প বলে প্রতারণা করতেন তিনি। কিন্তু কয়েক মাস যেতেই সে তাদের নিকট হতে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে। টাকা চাইতে গেলে তাদের প্রাণ নাশের হুমকী প্রদান করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম “ফেসবুক” এ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর পোস্ট দিয়ে তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে।
সম্প্রতি সাইফ আলী নামে এক সাংবাদিক ও তার তিন বন্ধুর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বদরুল। এ ঘটনায় সাইফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী সাইফ আলী লাল সবুজের কথা ডটকমকে বলেন, প্রায় এক বছর আগে নামস্বর্বস্ব একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে বদরুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। বদরুল সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিজেকে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। বিভিন্ন সময়ে সে নিজেকে একজন এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসায়ী, ধানমন্ডিতে নিজস্ব ফ্ল্যাট, কাফরুলে নিজের বাড়ি, নিজের ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি টাকার এফডিআর জমা আছে বলে জানিয়েছে। মিটফোর্ডে তার ওষুধের ব্যবসাও রয়েছে বলেও দাবি করে। এক সময় বদরুল উচ্চহারে লভ্যাংশ দেওয়ার বিনিময়ে ব্যবসায় বিনিয়োগের আহ্বান জানায়। পরে বদরুলের কথা মতো ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। প্রথম দিকে লভ্যাংশের টাকা ফেরত দিয়ে আরও বিনিয়োগের কথা বলে বদরুল। পরে বন্ধু ও সাংবাদিক সাখাওয়াত, রিয়াজ ও আবুল কালাম মিলে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। কিন্তু বিনিয়োগের দুই মাস পরেই প্রতারক বদরুলের আসল চেহারা ধরা পড়ে। টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় সে।
ডিবি সূত্র জানায়, বদরুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। একাধিক মামলায় ওয়ারেন্টও বের হয়েছে। কিন্তু সে ঘনঘন মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে থাকতো। তাকে এক দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রতারণার টাকা দিয়ে সে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে এফডিআর করে রেখেছে। তাকে আবারও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তিনি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা