অনলাইন ডেস্ক
যশোরের শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় শহিদ মিনার নির্মাণ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ মানেনি কোনো প্রাইমারি স্কুল। ফলে, নির্দেশ থাকার পরও গত মে মাসের পর নতুন করে একটিও শহিদ মিনার নির্মিত হয়নি। যদিও গত ৯ মে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে প্রত্যেকটি প্রাইমারি স্কুলে শহিদ মিনার নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তখন নকশাও পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে শহিদ মিনারের হালনাগাদ তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। সেই মোতাবেক ২৬ জুলাই যশোর জেলার তথ্য পাঠানো হয়েছে খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালকের কাছে।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় মোট ২৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ দুটি উপজেলায় শহিদ মিনার আছে মাত্র ৩৮টি। এর মধ্যে শার্শায় ১২৫টি স্কুলের মধ্যে ১৮ টিতে ও ঝিকরগাছায় ১৩১ টি স্কুলের মধ্যে ২০ টিতে শহিদ মিনার রয়েছে। যা অনেক আগে নির্মিত।
চলতি বছরের গত ৯ মে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে অভিন্ন শহিদ মিনার তৈরি করতে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নকশা পাঠানো হয়। তখন নির্ধারিত মাপ ও ডিজাইনে দুইটি অপশন রেখে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের সুবিধাজনক স্থানে শহিদ মিনার নির্মাণ করার নির্দেশ দেয়া হয়। দুইটি অপশন রেখে সেসময় নকশা পাঠানো হয় এ কারণে যে, জায়গার প্রাপ্যতা অনুসারে যাতে শহিদ মিনার নির্মাণ করা যায়। জায়গার স্বল্পতা বিবেচনায় ছোট বা বড় করার সুযোগ রেখে নির্ধারিত মাপে দুইটি শহিদ মিনারের নকশা করা হয়েছিল একই ডিজাইনে।
বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণের জন্যে সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে না বলে ওইসময় পত্রে উল্লেখ করা হয়। স্থানীয় উদ্যোগেই শহিদ মিনার নির্মাণ করতে হবে বলে দেয়া হয় নির্দেশনা। বিদ্যালয়ে পাঠানো নকশা অনুযায়ী বরাদ্দ ধরা হয় এক লাখ ৫১ হাজার দুইশ’ টাকা। এলজিইডি নকশাটি প্রণয়ন করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিদপ্তরের এই নির্দেশনা মানেনি উপজেলার কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত মে থেকে এই পর্যন্ত একটি শহিদ মিনারও নির্মিত হয়নি। কেন শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি তার কোনো সদুত্তর নেই প্রধান শিক্ষকদের কাছে। তারা কেবলমাত্র করোনার দোহাই দিচ্ছেন। যদিও এর আগে যতগুলো শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে তার সবই স্থানীয় উদ্যোগে করা হয়।
সর্বশেষ, গত ২৫ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর শহিদ মিনারের হালনাগাদ তথ্য চেয়ে পত্র পাঠানো হয়। পত্রে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত শহিদ মিনারের উপজেলাভিত্তিক হালফিল তালিকা আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে পরিচালক (বিদ্যালয়) বরাবর পাঠাতে হবে। বিদ্যালয়ের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, মোট বিদ্যালয়ের সংখ্যা, শহিদ মিনার আছে এমন বিদ্যালয়ের নাম ও সংখ্যা উল্লেখ করতে হবে নির্ধারিত ছকে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘আমরা স্থানীয় উদ্যোগে শহিদ মিনার করার ব্যাপারে স্কুলগুলোকে বলছি। করোনা কিছুটা কমলে সরেজমিনে স্কুলে স্কুলে গিয়ে বিষয়টি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।’