অনলাইন ডেস্ক
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে হেমাটোলজি বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান।
এ সময় উপাচার্য লিউকেমিয়া রোগ থেকে বাঁচতে লিউকেমিয়া রোগীর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্পর্কে রোগী, রোগীর স্বজন ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের মাঝে সচেতনতা তৈরির ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী যাতে সহজে জরুরি চিকিৎসা সেবা, প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং চিকিৎসার অন্যান্য উপকরণ সুলভে পেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকি রোগ নির্ণয় এবং ঝুঁকি নির্ণয়ের সর্বাধুনিক ও প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সহজলভ্য করতে হবে। এছাড়াও দেশে হেমাটোপরেটিক সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্ভিস আরও বিস্তৃত করার বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
গ্লোবোক্যান ২০২০ এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে নতুন করে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ এবং লিউকেমিয়ায় তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এক বছরে নতুন প্রায় ৩ হাজার মানুষের লিউকেমিয়া শনাক্ত হয় এবং দুই হাজারের বেশি মানুষের লিউকেমিয়ায় মৃত্যু হয়। লিউকেমিয়া আক্রান্ত রোগীরা মূলত রক্ত স্বল্পতা, দুর্বলতা, রক্তপাত, জ্বর এসব উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেমাটোলজী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ। তিনি জানান, লিউকেমিয়ার ধরন অনুসারে চিকিৎসায় ভিন্ন হয়ে থাকে। লিউকেমিয়া একিউট ও ক্রনিক এই দুই ধরনের হয়ে থাকে এবং ধরনভেদে চিকিৎসায় ভিন্নতা হয়ে থাকে। রোগ নির্ণয়ের পরে রোগের ঝুঁকির পর্যায় বিবেচনা করে রোগের চিকিৎসা পরিকল্পনা করা হয়। সিবিসি, পিবিএফ ফ্লো সাইটোমেটি, বোন ম্যারো পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয় এবং সাইটোজেনেটিক ও মলিকুলার পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর ঝুঁকির স্তর সম্পর্কে ধারণা লাভ করা হয়।
চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলা হয়, মুখে খাবার ঔষধ, কেমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। রোগ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ঔষধের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে ঔষধের ডোজ পরিবর্তন করা হতে পারে। ক্রনিক লিউকেমিয়া মিত্র চিকিৎসায় সিএলএল ও সিএমএল চিকিৎসায় টার্গেটেড থেরাপি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এসব ঔষধের অধিকাংশই এখন আমাদের দেশে পাওয়া যায়।
মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, রোগ বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনে হেমাটোপয়েটিক সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে রোগের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সম্ভব। উচ্চ ঝুঁকির অ্যাকিউট লিউকেমিয়ার চিকিৎসায় হেমাটোপয়েটিক সেল ট্রান্সপ্লান্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সেমিনারে হেমাটোলজী বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. শারমিন ইয়াসমিন ও ডা. মীম জারিন তাসনিম প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান। সেমিনারে বিশেষজ্ঞ প্যানেলে ছিলেন মেডিসিন অনুষদের ডিন হেমাটোলজী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, হেমাটোলজী বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস ও অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুজ্জামান খান প্রমুখ।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা