অনলাইন ডেস্ক
স্কুলে পড়ুয়া ছাত্রীদের নিয়ে মাত্র ২২ দিনের অনুশীলন শেষে সাফে খেলতে এসে ২৮ গোল হজমের ব্যর্থ অভিযান অবশেষে যেন শেষ হলো। গ্রুপ পর্বে আগের তিন ম্যাচে ১৬ গোল হজম করেছিল শ্রীলঙ্কা। আর শুধু আজকের ম্যাচেই লঙ্কানদের বাংলাদেশ গোল দিল গুণে গুণে ১২টি! সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে শুধু এক পয়েন্ট দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মারিয়া মান্ডারা জিতলেন রীতিমতো লঙ্কান প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দিয়ে। ১২-০ গোলের জয়ে ফাইনালও হয়েছে নিশ্চিত। আগামী বুধবারের ফাইনালে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ভারতের মেয়েরা।
আজ দিনের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৯ পয়েন্টে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। ১০ পয়েন্টে পাঁচ দলের মধ্যে সবার ওপরে বাংলাদেশ। চার বছর আগে ভুটানে ২০১৮ সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তানের মেয়েদের বিপক্ষে ১৭-০ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। কমলাপুরর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে যে হারে গোল করা শুরু করেছিলেন শাহেদা আক্তার রিপা-আফিদা খন্দকাররা, ভালো কয়েক সুযোগ নষ্ট না হলে হয়তো সেই সংখ্যাটাও ছাড়িয়ে যেত স্বাগতিকেরা। হ্যাটট্রিক করেছেন ফরোয়ার্ড শাহেদা আক্তার রিপা। ডিফেন্ডার হয়েও দূরপাল্লার তিন শটে হ্যাটট্রিক করেছেন আফিদা খন্দকারও।
আগের ম্যাচ থেকে পাঁচ পরিবর্তন এনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দল সাজান বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। পরিবর্তিত দল নিয়ে প্রতিপক্ষকে গা গরমের সুযোগ না দিয়েই দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সের ডানপ্রান্ত দিয়ে শাহেদা আক্তার রিপার শট বারে লেগে ফিরলে ফিরতি বলে স্বপ্না রাণীর প্লেসিং লঙ্কান গোলরক্ষক থারিন্ডি জানিথিয়ার গ্লাভস ছুঁয়ে ঠাই নেয় জালে। পাঁচ মিনিট পরেই আবারও বাংলাদেশের গোল। এবার বামপ্রান্ত থেকে মারিয়া মান্ডার রক্ষণচেরা পাস থেকে ঋতুপর্না চাকমার কোণাকুণি শটও আটকাতে পারেননি লঙ্কান গোলরক্ষক।
খেলার বয়স ২০ মিনিট পেরোনোর আগেই গোলখাতায় তৃতীয়বারের নাম তোলে বাংলাদেশ। নিজেদের অর্ধ থেকে আঁখি খাতুনের বাড়ানো বলে লঙ্কান দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে লক্ষ্যভেদ করেন শাহেদা আক্তার রিপা। ৪৩ মিনিটে লঙ্কান জালে গোলের হালি পূর্ণ করে স্বাগতিকরা। ৪৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে আফিদা খন্দকারের দূরপাল্লার পাসে আলতো চিপে লঙ্কান গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বলকে জালে জড়ান ঋতুপর্না চাকমা।
বিরতি থেকে ফেরার দুই মিনিট পরেই অসাধারণ এক গোলে ব্যবধান ৫-০ করেন ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। লঙ্কান গোলরক্ষক একটু এগিয়ে এসেছেন দেখে ৪০ গজ দূর থেকে লম্বা এক শট নেন আঁখি। ৪৭ মিনিটে দীর্ঘদেহি বাংলাদেশি ডিফেন্ডারের শট লঙ্কান গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে জড়িয়ে যায় জালে। দুই মিনিট পর আঁখির আরেক দূরপাল্লার শট থেকে গোল পান রিপা। ৪৯ মিনিটে নেওয়া আঁখির শটে গোলমুখে বল পান কক্সবাজারের মেয়ে রিপা। তার দুর্বল প্লেসিংটাও ঠেকাতে পারেননি থারিন্ডি জানিথিয়ার।
বল লক্ষ্যে থাকলেই গোল হচ্ছে দেখে লোভটা সামলাতে পারলেন ডিফেন্ডার আফিদা খন্দকার। প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার তিন শটে করেছেন হ্যাটট্রিক। প্রথমে ৫৪ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে গোল পাওয়া শুরু আফিদার। তার নেওয়া শট বদলি গোলরক্ষক বানদারাকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে যায় পোস্টে। ৭০ মিনিটে ৩০ গজ দূর থেকে আফিদার আরেক শটে বাংলাদেশের গোলের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৮-০! ৮৩ মিনিটে সেই ৩০ গজ দূর থেকেই দূরপাল্লার শটেই হ্যাটট্রিক হয়েছে আফিদার। ৮৭ মিনিটে হ্যাটট্রিকে গোলের ডজন পূরণ করেন শাহেদা আক্তার রিপা।