বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবা শতভাগ নিশ্চিত করা যায়নি। চিকিৎসকদের গ্রামে থাকার ব্যাপারে অনীহা রয়েছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরমুখী। দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে হাসপাতাল ও ক্লিনিক। যে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার, তা এখন বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। দেশের বাজারে ভেজাল ও মানহীন ওষুধের ছড়াছড়ি—সংবাদপত্রে এমন খবর প্রায়ই থাকে। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে রোগ থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে ওষুধ কিনতে হয়। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ মানুষকে রোগ থেকে মুক্তি তো দেয়ই না, বরং মৃত্যু ত্বরান্বিত করে। জীবন নিয়ে নিষ্ঠুর বাণিজ্য চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গজিয়ে উঠেছে ভুয়া হাসপাতাল ও ক্লিনিক। ভাড়া করা ডাক্তার দিয়ে এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক চালানো হয়। আবার এসব চিকিৎসকেরও অনেকেই ভুয়া। চিকিৎসাবিজ্ঞানে কোনো ডিগ্রি নেই, এমন অনেকেই নানা ডিগ্রি লাগিয়ে প্যাড ছেপে চিকিৎসা দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন অনেক ডাক্তার ধরাও পড়েন। ভুয়া হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক। এসব খবরের পাশাপাশি এবার যে খবরটি পাওয়া গেছে, সেটি আরো বিপজ্জনক।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিথ্যা ঘোষণায় নামমাত্র মূল্যে মানহীন চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করে রমরমা ব্যবসা করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। মানহীন ওই সব সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন ওষুধের দোকান, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে। শুল্ক গোয়েন্দাদের তৈরি করা ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানহীন চিকিৎসাসামগ্রী বেশি আমদানি করা হয়েছে তাইওয়ান, চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, কোরিয়া ও জার্মানি থেকে। ব্যবসায়ী পরিচয়ে একাধিক ব্যক্তি আন্তর্জাতিক চক্রের সহযোগিতায় মানহীন চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করছেন। দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে অসাধু আমদানিকারকদের নিয়োগ করা ডিলার বা এজেন্টদের মাধ্যমে ওই সব সামগ্রী দেশব্যাপী বিক্রিও করা হচ্ছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মানহীন চিকিৎসাসামগ্রীর মধ্যে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ আছে।
শুধু ওষুধ নয়, নিম্নমানের যেকোনো চিকিৎসাসামগ্রীই জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। কারণ নিম্নমানের উপকরণে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। আর এসব উপকরণের মাধ্যমে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা যাবে না। ভুল ফলাফল দিলে চিকিৎসায়ও ভুল হবে, যার পরিণতিতে রোগীর বড় রকমের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এসব জেনেও একটি অসাধু ব্যবসায়ীচক্র মানহীন চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করে বাজারজাত করছে। এটি শুধু অপরাধ নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনক অপরাধ। এটি বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে— এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
NB:This post is collected from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা