অনলাইন ডেস্ক
প্রতি বছরই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দাদের নাকানিচুবানি খাওয়ায় ডেঙ্গুর বাহক ছোট্ট মশা। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয় যে, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রোগীর চাপে ‘তিল ঠাঁই’ হয় না। বিগত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে ডেঙ্গুতে কত যে প্রাণ গেছে, তবুও কোনোভাবেই এর ভয়াবহতা রুখতে পারেনি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। এর ওপর এ বছর ঢাকার দুই সিটিতে নেই কোনো মেয়র ও কাউন্সিলর। সিটি কর্পোরেশন পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগ দিলেও মাঝে অনেকটাই অকেজো হয়ে পড়ে কার্যক্রম। মশক নিধনসহ ডেঙ্গু মোকাবিলার কাজে কিছুটা ভাটা পড়ায় বর্তমানে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে নাজুক। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ রূপ নিলে প্রাণহানি ঘটবে বহু মানুষের। অথচ ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক প্রক্রিয়াতেই সীমাবদ্ধ রেখেছে তাদের কার্যক্রম।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলররা অফিস করছেন না, এক কথায় তারা লাপাত্তা। কারণ, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের মতাদর্শের। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দুই সিটি কর্পোরেশনের সব কাউন্সিলরকে অপসারণ করা হয়। ফলে ভেঙে পড়ে মশক নিধন কার্যক্রম। এরপর থেকে ডেঙ্গু মোকাবিলার সাধারণ কার্যক্রমগুলোও সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। আর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে মেয়রের স্থলে প্রশাসক বসিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নাগরিকসেবায় তারা কাজ শুরু করলেও অনেক কিছুই এখনো বুঝে উঠছে পারছেন না।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকার দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের চেয়ে বেশি। সেখানে বলা হয়— দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর হার বেশি। এর অর্থ হচ্ছে এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এলাকাগুলো ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।