স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক – এই লেখা বুকে লিখে ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন নুর হোসেন। এসময় আন্দোলনরত অবস্থায় তৎকালীন পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। গত ১০ নভেম্বর ছিল তার মৃত্যুদিন। এদিন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা নুর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ বলায় জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছেন নূর হোসেনের মা মরিয়ম বিবি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাঙ্গার বক্তব্যের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে নূর হোসেনের পরিবার।
অবস্থান কর্মসূচিতে মরিয়ম বিবি বলেন, নূর হোসেন আমার একার ছেলে না, সে জনগণের ছেলে। সে (রাঙ্গা) জনগণের ছেলেকে নেশাখোর বলছে। সে যদি নেশাখোর হতো, তাহলে দেশের জন্য জান দিতে পারতো না। আমি জনগণের কাছে বিচার চাই, আল্লাহর কাছে বিচার চাই।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে বুকে-পিঠে লেখে রাজপথে নামলো দেশের জন্য, জনগণের জন্য। কীসের জন্য নামলো? ও কি পাগল ছিল, ওর কি জ্ঞান, বিচার ছিল না? আজ ৩০ বছর পরে ওরে নেশাখোর বলা হলো। আমি এ বিচারের দায়ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দিলাম। জনগণের কাছে তাকে (মসিউর রহমান রাঙ্গা) ক্ষমা চাইতে হবে।
নূর হোসেনের ভাই আলী হোসেন বলেন, আমার ভাইকে দেশের জনগণ ভালোবাসে, শ্রদ্ধা জানায়। সে নূর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ বলা হলো কেন? ৩৩ বছর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমাদের বাসায় গিয়ে আমার বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এসেছিলেন। তিনি সংসদেও ক্ষমা চেয়েছিলেন। আমরা তো ক্ষমা করেই দিয়েছিলাম, কেন ৩৩ বছর পর আবার সে পুরোনো ক্ষতে আঘাত করা হলো?
তিনি বলেন, আপনারাই বলেন, তখন কি দেশে ইয়াবা ছিল? ফেনসিডিল ছিল?
আলী হোসেন বলেন, নূর হোসেন দেশের জন্য, জনগণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছিল। সে জনগণের কাছেই আমরা বিচার চাই।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- নূর হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, বোন শাহানা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
রোববার (১০ নভেম্বর) জাপার মহানগর উত্তর শাখার আয়োজনে ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাঙ্গা বলেন, নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা