অনলাইন ডেস্ক
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ছিল স্রেফ ৫ উইকেট। সেটা তুলে নিতে খুব বেশি সময় নিল না মুমিনুল হকের দল। দ্রুত গুঁটিয়ে যেয়ে বড় লিড নিতে পারল না নিউজিল্যান্ড। মাত্র ৪০ রানের লক্ষ্য পাওয়া বাংলাদেশ দিনের প্রথম সেশেনেই হেসেখেলে জিতে ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ডে।
এই টেস্টের প্রথম থেকেই ব্যাটে-বলে কিউইদের শাসন করেছে বাংলাদেশ। বে ওভালে টস জিতে স্বাগতিকদের ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক।
ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় কিউইরা। তবে ডেভন কনওয়ের ১২২, হেনরি নিকলসের ৭৫ ও উইল ইয়ংয়ের ৫২ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান তোলে স্বাগতিকরা। ৩টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী মিরাজ। ২ উইকেট নেন মুমিনুল হক আর ১টি উইকেট নেন এবাদত হোসেন।
কিউইদের ৩২৮ রানের জবানে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ৪৫৮ রান। মুমিনুল হকের ৮৮, লিটন দাসের ৮৬, মাহমুদুল হাসানের ৭৮ ও নাজমুল হোসেন করেন ৬৪রান। কিউই বোলারদের সামলে ১৩০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। ৪ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, ৩ উইকেট নেন নিল ওয়াগনার।
১৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা কিউই ব্যাটাররা চতুর্থ দিনেই খেই হারায় এবাদত, তাসকিনদের গতি আর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কাছে। চতুর্থ দিনের শেষ সেশনেই হারিয়ে ফেলে পাঁচ উইকেট।
তবে রস টেলর ও উইল ইয়াং ৭৩ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে নেন দলকে। ৫৪ ওভারে দলীয় ১৩৬ রানের মাথায় এবাদতের বলে ইয়াং ৬৯ রান করে ফেরার এক বল পরেই শূন্য রানে ফেরেন হ্যানরি নিকলস।
৫৬ ওভারের তৃতীয় বলে আবারও আঘাত এবাদতের টম ব্লান্ডেলকে ফেরান (শূন্য রানে) ১৩৬ রানের মাথায়। তাতে নিউজিল্যান্ডের দিন শেষ হয় ১৪৭ রানে ১৭ রানের লিড নিয়ে।
কিউইদের একমাত্র ভরসা রস টেইলরকে পঞ্চম দিনের দ্বিতিয় ওভারেই ৪০ রানে ফেরান এবাদত। টেইলরকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট নেন এবাদত। এ ছাড়া ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেসার রবিউল ইসলামের ৫ উইকেট নেওয়ার পর বাংলাদেশি কোনো পেসারের পাঁচ উইকেট পাওয়ার রেকর্ডও এটি।
টেইলরের বিদায়ের পর মাত্র ২২ রান যোগ করতেই সব উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে শেষ হয় কিউইদের ইনিংস। এতে ৩৯ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা। এবাদত নেন ৬ উইকেট, তাসকিন ৩টি ও মেহেদী মিরাজ নেন ১টি উইকেট।
মামুলি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টিম সাউদির করা ইনিংসের দ্বিতিয় ওভারে সাদমান ইসলাম বিদায় নেন ৩ রানে। এরপর ৩১ রানের জুটি গড়ে কাইল জেমিনসনের বলে ক্যাচ দিয়ে ১৭ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন।
বাকিটুকু পথ পাড়ি দেন মুমিনুল-মুশফিক। মুমিনুলের ব্যাটে আসে ১৩, মুশফিক করেন ৫ রান। টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে চার দিন দাপট দেখিয়ে পাওয়া এই জয় নিঃসন্দেহে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট অপরাজিত থাকার ধারারও শেষ হলো নিউজিল্যান্ডের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৩২৮
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৪৫৮
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস : (আগের দিন ১৪৭/৫) ৭৩.৪ ওভারে ১৬৯ (ল্যাথাম ১৪, ইয়াং ৬৯, কনওয়ে ১৩, হেনরি ০, ব্লান্ডেল ০, টেইলর ৪০, রবীন্দ্র ১৬, জেমিসন ০, সাউদি ০, ওয়্যাগনার ০*, বোল্ট ৯*: তাসকিন ১৪-৩-৩৬-৩, শরিফুল ১২-২-৩০-০, মিরাজ ২২-৫-৪৩-০, ইবাদত ২১-৬-৪৬-৬, মুমিনুল ৪-০-৭-০)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৪০) ১৬.৫ ওভারে ৪২/২ (সাদমান ৩, শান্ত ১৭, মুমিনুল ১৩*, মুশফিক ৫*; বোল্ট ৫-৩-৪-০, সাউদি ৫-২-২১-১, জেমিসন ৩.৫-১-১২-১, ওয়্যাগনার ৩-১-৪-০)।
ফল : বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : ২ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ইবাদত হোসেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা