নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কেবল পরিবার নয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে হবে।
ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে একথা বলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. ফওজিয়া মোসলেম। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন উপলক্ষ্যে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি রবিবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজ ক্ষমতার অপব্যবহারের হাতে জিম্মি। এর ফলে সৃষ্ট নৈরাজ্যের একটি উদাহরণ হলো নারীর প্রতি সহিংসতা। নারীকে সমাজের দূর্বল অবস্থানের মনে করে তাদের প্রতি সহিংসতা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সমাজকে অপরাধপ্রবণতা থেকে মুক্ত করতে না পারলে এই সহিংসতার হার ক্রমান্বয়ে বেড়েই যাবে। সহিংসতা প্রতিরোধ কেবল পরিবার থেকে নয় এর সাথে প্রশাসন ও রাষ্ট্রকেও এগিয়ে আসতে হবে। আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক রেখা চৌধুরী বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে অনেক আইন হয়েছে। আইন সময় অনুসারে সংশোধিত করার পর বাস্তবায়নে বিলম্ব দেখা যায়। আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে সরকারের সহযোগিতার একান্ত কাম্য।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ডেপুটি পরিচালক শাহনাজ সুমী বলে, নারীরা আজ সকল ক্ষেত্রে সফল। তাদের সফলতার পথে এগিয়ে যেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে সহিংসতা সৃষ্টির মাধ্যমে। পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী গত জানুয়ারী থেকে ২০০০ এর বেশি নারী নির্যাতনের শিকার এবং ৭০০ জনের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার। এটি কোন ভাবেই সভ্যসমাজের নিদর্শন হতে পারেনা। অপরাধীর বিচারহীনতার সংস্কৃতি নারী নির্যাতনকে বৃদ্ধি করছে।
তিনি এসময় এই নির্যাতন ও সহিংসতা দূর করতে সকলকে সংঘটিত ভাবে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
জাতীয় নারী জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক উম্মে হাসান ঝলমল বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গেলে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বিভিন্ন ইস্যূ তৈরি করা হয়। আমাদের ধর্ষণ , রাহাজানির বিরুদ্ধে দাড়াঁতে হবে। সব নারী- পুরুষ নির্যাতনকারী নয়। প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিনিধি ফাহমিদা জামান বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারীর সহিংসতার জন্য আলাদা করে মানববন্ধন করতে হয়। প্রায় ১৩০০ নারী নির্যাতনের শিকার। অপরাধীর বিচার হলে এই ধরণের ঘটনার সংখ্যা কমত।
ব্র্যাকের উপজেলা ম্যানেজার মুনমুন খান বলে, নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতাম কারণ নারীকে কখনো মানুষ ভাবা হয় না। নারী-পুরুষের প্রতি বৈষম্য দূর করতে ব্র্যাক তৃণমুলে কাজ করছে। কেবল প্রতিষ্ঠান নয়। নারী পুরুষের অসমতা দূর করতে পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা দিতে হবে।
এ্যডাব এর পরিচালক একেএম জসীম উদ্দিন বলেন, প্রতিনিয়ত ঘরে বাইরে নারীর প্রতি সহিংসতার খবর আতংকিত করে তোলে। দেশের উন্নয়নে নারীর অবদান অনেক। তাদের প্রতি নির্যাতন ন্যক্করজনক বিষয়। এই সহিংসতা দূর করতে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে প্রতিরোধের জায়গা তৈরি করতে হবে।
ঢাকা ওয়াইডব্লিউসিএ এর প্রতিনিধি ইরসাত জাহান বলেন, নারী ও কন্যা শিমুর প্রতি নির্যাতন একটি আরোচিত সমস্যা। কিছু অসুস্থ মানসিকতার ব্যক্তিদের জন্য নারী ও কন্যারা নিরাপদে বসবাস করতে পারছে না। আমরা চাই না এসব অসুস্থ ব্যক্তিরা এদেশে বসবাস করুক।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, সামাজিক প্রাতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ, কর্মী, সংগঠক ও সাংবাদিকসহ প্রায় ১০০ জন উপস্থিত ছিলেন ।
ফেসবুক পেজ :
আরও পড়ুন : নারী সাংবাদিকের জন্য আরোপিত পুরুষতান্ত্রিক সুরক্ষা ম্যানুয়াল
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা