ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষণের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
সোমবার ( ৬ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যাধি দুর্নীতি ও বিচারহীনতার উপর ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বললে বিচার হয়, না বললে বিচার হয় না। আমরা এ রাজনীতি থেকে মুক্ত হতে চাই এবং ধর্ষণের বিচার চাই।
তিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও নারী নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার দাবি জানান। ধর্ষককেই প্রমাণ করতে হবে তিনি ধর্ষণ করেন নাই। তিনি সকল ছ্ত্রা সংগঠন ও ছাত্র সমাজকে নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক, অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক রেখা চৌধুরী ,ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক, রেহানা ইউনুস, পরিচালক লিগ্যাল এডভোকেসি এন্ড লবি মাকসুদা আক্তার লাইলী, পরিচালক এডভোকেসি এন্ড লবি জনা গোস্বামী বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক এবং উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইখ ইমতিয়াজ এবং শিক্ষার্থী সুয়িলা সাফারা।
ড. সাইখ ইমতিয়াজ বলেন, গত বছর ১৭০০ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগের বয়স ১২ বছরের নিচে এবং ৩ থেকে ৬০ বছরের কন্যা ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে কিন্তু আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। তিনি ধর্ষণের মামলার দ্রুত বিচার আইন করার আহবান জানান।
সংগঠনের সহ-সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক রেখা চৌধুরী এই ধর্ষণ ঘটনার দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সহসাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, আমরা দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছি কিন্তু আজও ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে পারছি না। ধর্ষণ নারীকে অবদমিত করার প্রধান অস্ত্র।
অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান এবং নির্যাতনের শিকার নারীর নাম পরিচয় গোপন রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সংগঠক, কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানবন্ধন সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপ পরিষদের সদস্য অ্যাড. দিপ্তী রাণী সিকদার।
ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথের রবিবার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বাস থেকে নামার পর ধর্ষণের শিকার হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে। রোববার গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁকে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা