অনলাইন ডেস্ক
বিক্রেতারা বলছেন, এপ্রিল মাসের ১০ অথবা ১১ তারিখ উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এর আগে রমজানের শেষ দশকেই আরো জমজমাট হবে বেচাকেনা। রোজা শেষ সময়ে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি মার্কেট ও ফুটপাত এবং গুলিস্তান এলাকার ফুটপাত ঘুরে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। এসব এলাকায় মানুষের ভিড়ে ঠিকমতো হাঁটার জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। গুলিস্তানের ফুটপাতে ছোট চকি ও ভ্যানে পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, টিশার্ট, জুতা, ছোট বাচ্চাদের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি আশেপাশের মার্কেটে পাঞ্জাবি-পায়জামা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে নিউমার্কেট এলাকায়ও একই অবস্থা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভিড় থাকছে ক্রেতাদের। এক এলাকায় বিভিন্ন মার্কেটে চাহিদা অনুযায়ী সবধরনের পোশাক, ক্রোকারিজসহ বিভিন্ন পণ্য থাকার কারণে কাছের দূরের মানুষজন ভিড় করেন এখানে।
সরেজমিনে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, নূর ম্যানশন মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টার, এলিফ্যান্ট রোড ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি মার্কেটেই ব্যাপক ক্রেতার সমাগম। বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক আর ক্রেতাদের দামাদামি চলছে মার্কেটের ভেতর। এর মধ্যে সায়েন্স ল্যাবের পাঞ্জাবির দোকান এবং নিউমার্কেটের ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। তবে মার্কেটের ভেতরের পোশাকের দাম বাড়তি চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ক্রেতা।
তানভীর আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত দাম চাওয়ার অভ্যাস অনেক আগে থেকেই রয়েছে। একটি সাধারণ কাজ করা পাঞ্জাবি দাম চেয়েছে ৫ হাজার টাকা। যা সবশেষ এক হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। ঈদের জন্য অনেক কালেকশন। কিন্তু বিক্রেতারা দাম ধরে রেখেছে। তারা জানে ঈদের সময় এখানকার অধিকাংশ ক্রেতাই বাইরে থেকে মার্কেট করতে আসেন। সেজন্য শুরুতেই গলাকাটা দাম বলে দেন।
রোজিনা ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, শাড়ি ও থ্রি পিস কিনেছি। ম্যাক্সিমাম দোকানদারই ফিক্সড প্রাইস লিখে রেখেছেন। অথচ সবশেষ সেগুলো দামাদামি করেই কিনতে হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে আমরা যারা মার্কেট করতে আসি তারা একদিনেই সব কাপড় কিনে নিয়ে যাই। এটা ব্যবসায়ীরা ভালো করেই জানে। সেজন্য দামটাও একটু বেশি চেয়ে বসে থাকে।
অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ বিল, দোকান ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় তার সবকিছুই যুক্ত করতে হচ্ছে কাপড়ের দামে। সেজন্য অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি রাখতে হচ্ছে। তবে স্বল্পলাভে অধিক বিক্রির জন্য তারা চেষ্টা করছেন বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি নিয়ে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের একটি শার্ট-প্যান্টের দোকানের বিক্রয় কর্মী রুহান ইসলাম বলেন, রাত ১২টা-১টা পর্যন্ত মানুষ দোকানে আসে। রোজার শুরু থেকেই এমন অবস্থা। বিক্রি খুব ভালো হচ্ছে। রোজার শেষ দশ দিনে আরো জমজমাট বিক্রি হবে। ঈদ উপলক্ষ্যে দোকানে কালেকশন বাড়ানো হয়েছে। এবার যেহেতু কিছুটা গরম সেজন্য পাতলা কাপড়ের টিশার্ট, হাফহাতা শার্ট রাখা হয়েছে।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ি ব্যবসায়ী আমির হামজা বলেন, ঈদের সময় মানুষজন তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য শাড়ি নিয়ে যায়। সেজন্য আমরা সব বয়সী মহিলাদের ব্যবহার উপযোগী শাড়িই রাখি। বেচাকেনা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ঈদের আগে আরো বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। ব্যবসাতো রোজার ঈদেই হয়। কোরবানির ঈদে তেমন কাপড়-চোপড় কিনে না।
এছাড়া সাধারণ মানুষ যেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিউ মার্কেটে শপিং করতে আসেন। এসব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ সক্রিয় রয়েছে। এখন পর্যন্ত তোমার কোন সমস্যা হয়নি। আমরা আশা করি শেষ সময় পর্যন্ত সুন্দর পরিবেশে বজায় থাকবে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা