বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ঘোষিত ২০-২২ মার্চ ২০২০ ঢাকা থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে তিস্তা মার্চের পরিবর্তিত কর্মসূচি হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকির কারণে তিস্তা মার্চের কর্মসূচি স্থগিত করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের ঘোষণা পূর্বেই দেয়া হয়েছিল।
শুক্রবার (২০ মার্চ) সকাল ১১ টায় ঢাকার জাতীয প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নদী-পানি-জাতীয় স্বার্থ রক্ষা আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব নইম জাহাঙ্গীর, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ ঢাকা নগর নেতা খালেকুজ্জামান লিপন প্রমুখ।
সমাবেশে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, শুষ্ক মৌসুম শুরুর প্রাক্কালে বাসদ এর উদ্যোগে ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ মার্চ করে ভারত কর্তৃক একতরফাভাবে পানি প্রত্যহারের প্রতিবাদ, জনসচেতনতা সৃষ্টি ও সরকারের নতজানু নীতির প্রতিবাদ করার কর্মসূচি ছিল। করোনার ভয়াবহতা, সংক্রমন ঝুঁকি বিবেচনা করে আমরা তিস্তা মার্চ কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কিন্তু ভারতের পানি আগ্রাসন নিয়ে জাতীয় সংকটের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলমান রাখার অংশ হিসেবে এই আতংকজনক পরিস্থিতিতেও আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে কর্মসূচি পালন করলাম। বাংলাদেশ নদী ও পানির দেশ। পানির প্রবাহ বন্ধ হলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যাবে।
ভারত তিস্তা নদীতে বাংলাদেশের উজানে গজল ডোবায় ব্যারেজ নির্মাণ করে তিস্তার পানি অনৈতিক ও একতরফাভাবে প্রত্যাহার করায় তিস্তা মরছে, উত্তরবঙ্গের ৯টি জেলার কৃষি হুমকির মুখে, ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে ফলাফলে উত্তরবঙ্গ আজ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। শুধু তিস্তা নয়, আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের নামে বাঁধের মালায় বাংলাদেশকে ঘিরে ফেললে তা বাংলাদেশের প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ ভয়ংকর ঝুঁকিতে ফেলবে। ইতিমধ্যে ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবন হুমকীর মুখে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবনাক্ততা এবং রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ ঘটে চলছে। এতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের।
সরকারের নতজানু হয়ে থাকা নীতির কারণে বাংলাদেশ তার পানির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের গাল ভরা বুলির আড়ালে আমাদের পানির অধিকার যেন হারিয়ে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু ভারতের পানি আগ্রাসন নয়, দেশের মধ্যে দখল দূষণেও নদীর মৃত্যু ঘটছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের বিরুদ্ধে কথার বাগারম্বর না করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। তিনি, হাসপাতালে করোনা সনাক্তকরণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীর সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ, ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিক, সাংবাদিক, পুলিশ সহ সকলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তিনি বলে, করোনার আতংকে এখন জনজীবন আতংকিত।
এর সুযোগে এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে চালের দাম কেজিতে ৭/৮ টাকা, ডিমের ডজন ২০ টাকা বৃদ্ধিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনজীবনে আরো সংকট নামিয়ে আনছে। অথচ সরকারের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নাই। তিনি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। করোনার দুর্যোগের সুযোগে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের চক্রান্ত বন্ধ করার দাবি করে জনগণের প্রতি আতংকগ্রস্থ না হয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা